ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দিনাজপুরে সর্বত্র শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল

কৌশিক বোস, দিনাজপুর
🕐 ৪:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

দিনাজপুরে সর্বত্র শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল

শীতের দু’মাসের আম গাছে মুকুল আসে। কিন্তু এবার দিনাজপুর অঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই মাঘের শুরুতে জেলার সর্বত্র আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আম বাগানে আগাম মুকুল দেখে বাগান মালিকেরা উৎফুল্য প্রকাশ করেছে।

দিনাজপুর কৃষি বিভাগের ফল নিয়ে গবেষনা নিয়ে নিয়োজিত কৃষিবিদ সহকারী পরিচালক আশরাফুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এবারে এই জেলার আমের সম্ভব সফলতা নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, শীত বিদায় নেয়ার আগেই আমের মুকুল আসা খুব একটা ভালো নয়। কারণ, এখন ঘন কুয়াশা পড়লে গাছে আগেভাগে আসা মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যা ফলনেও প্রভাব ফেলবে। তবে শীতের প্রকোট গত ২০ জানুয়ারি থেকে কমতে শুরু করেছে। এ কারণে আম গাছে আসা মুকুল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভবনা কমে গেছে। জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার আম বাগানের মালিকদের তাদের আম গাছে আসা মুকুল যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এর জন্য বাগানের প্রত্যেক গাছের গোড়ায় পানি দেয়ার জন্য ও ভিটামিন স্প্রে মুকুলে করার জন্য কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা পরার্মশ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরার্মশে বাগান মালিকরা তাদের বাগান গুলোতে সেচ যস্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত পানি দিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া গাছে কৃষি বিভাগের পরার্মশ অনুযায়ী স্প্রে করা হচ্ছে। ফলে এখন পর্যন্ত আম গাছে আসা মুকুলের কোন খারাপ লক্ষণ দেখা যায়নি। তিনি বলেন, এই জেলায় বাম্পার আমের উৎপাদন ও ভালো ফলন অর্জিত করতে কৃষি বিভাগ বাগান মালিকদের সহযোগীতায় চলমান রাখবেন বলে নিশ্চিত করেন।

জেলার বিরল উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের আম বাগানের মালিক হরিপদ সরকার জানান, তার ২ একর ২২ শতক জমির উপরে আম বাগান রয়েছে। এখানে গোপাল ভোগ, মিছরি ভোগ ও ছাতা পড়ার ১৯২টি আমের গাছ রয়েছে। এবার আগাম আমের গাছে মুকুল আসায় গাছে গাছে শুরু হয়ে গেছে মৌমাছির গুঞ্জন। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন কাছে টানছে মৌমাছিদের। গাছে গাছে চলছে ভ্রমরের সুর ব্যঞ্জনা।

দিনাজপুর সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রাকিব হাসান বলেন, এ এলাকার অনেক গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে।

সদর উপজেলার কসবা এলাকার আসলাম হোসেন বলেন, শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তবে এরই মাঝে আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে আমের মুকুল আসে। এবার প্রায় এক মাস আগে এসেছে মুকুল। তবে মুকুলে কোন ক্ষতি লক্ষ্য করা যায়নি।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, কিছু আম গাছে আগাম মুকুল এসেছে। শীতে আমের মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। মূলত ক্ষতি করে কুয়াশা। এ কারণে মুকুল রক্ষায় বাগান মালিকদের গাছ পরিচর্যায় গুরুত্ব ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কুয়াশার কারণে এক ধরনের ফাঙ্গাস সৃষ্টি হয়। তাতে মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই নিয়মিত স্প্রে করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলায় চলতি বছর গত বছরে তুলনায় বাগানের সংখ্যা বেড়ে গেছে। লিচু বাগানের মধ্যে অতিরিক্ত ফলন হিসেবে আম্রপালি আমের গাছ লাগানো হয়েছে। এই আম গাছ ১০ বছর পর্যন্ত রাখা যায়। লিচুর গাছ বড় হওয়া পর্যন্ত আম্রপালি আম অতিরিক্ত ফলন পাওয়া যায়।

 
Electronic Paper