ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে নিঃস্ব ৬০ পরিবার, হুমকিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

সুজন মাহমুদ, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম)
🕐 ৫:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৫, ২০২২

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে নিঃস্ব ৬০ পরিবার, হুমকিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

গত দেড় সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র নদের অব্যাহত ভাঙনের কবলে অন্তত ৬০টি পরিবার ভিটে-মাটি হারিয়েছে। ভূক্তভোগি পরিবার গুলোর পাশে দাড়ায়নি কেউই। ভিটে-মাটি হারিয়ে এখন তারা চরম হতাশা নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন পার করছে। নদের মাত্র ১৫ গজ দুরত্বে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের চরনেওয়াজী ঢাকাইয়া পাড়া গ্রামের অন্তত ৬০টি পরিবারের বাড়ী-ঘর ও আবাদী জমি ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। আরও অর্ধশত বসতবাড়ী, ২টি মসজিদ ও চরনেওয়াজী সরকারী বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে হুমকির মুখে। অনেকেই অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে তাদের বসতঘর। কেউ কোন খোঁজ নিচ্ছে না তাদের।

স্থানীয়রা জানান, বাড়ির ভিটা ছাড়া তাদের বাড়ী তৈরির মত আর কোন জমি-জমা নেই। অন্যের বাড়ীতে আশ্রয়ের জন্য হন্নো হয়ে খুঁজছেন একটু জায়গা। এখনও মেলেনি তার আশ্রয়স্থল। ওই এলাকার বিধবা ববিতা বেগমের এতিম দুই সন্তান নিয়ে রয়েছেন একই সমস্যায়। চুলো জ্বালানোর মত এক মুষ্টি খাবারও নেই তার কাছে। চিন্তায়, রোগে-শোকে ৪০ বছরের ববিতার বয়স মনে হয় ষাটোর্ধ। ববিতা, জামাল, কামাল ও হোসেনদের কাঁন্নায় ভারী হয়েছে আশপাশের পরিবেশ। প্রায় সকলেই আকুতি তাদের বাঁচানোর।

চরনেওয়াজী বালিকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার বিদ্যালয়টি নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে। নদী থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ১৫ মিটার। দুই-এক দিনের মধ্যে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে চলে যাবে। আমি উপর মহলে কথা বলেও কোন সারা পাচ্ছি না। এখন কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছি না, কি করবো।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার শাহ আলম জানান, ঢাকাইয়া পাড়ায় যে বাড়ী গুলো ভেঙ্গে গেছে তারা কয়েকদফায় ভাড়ঙ্গনের কবলে পরে শেষে এই এলাকায় বসতি গড়ে। সেটিও এখন ভেঙ্গে গেল। আসলেই এদের আর কোন যাওয়ার জায়গা নাই। তাই সরকারে কাছে দাবী এদের আশ্রয়ের ব্যবস্থাসহ দ্রুত নদী ভাঙ্গনরোধের কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্তী জানান, নিঃস্ব পরিবারদের তালিকা করে সাময়িকভাবে তাদের জন্য ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে যে পরিবার গুলোর জায়গা-জমি নেই তাদের অন্যত্র আশ্রয়নের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে হবে।

 
Electronic Paper