ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্বল্প সংখ্যক আসনে মিটছে না চাহিদা

সরকার অরুণ যদু, রাজারহাট
🕐 ৭:২৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২

স্বল্প সংখ্যক আসনে মিটছে না চাহিদা

রাজারহাট রেলওয়ে স্টেশনে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি না দেয়ায় জনভোগান্তি বাড়ছে। অথচ রংপুর জেলায় তিন স্টেশনেই দেয়া হচ্ছে যাত্রাবিরতি। এছাড়া রাজারহাট সহ পুরো জেলায় স্বল্প সংখ্যক আসনে মিটছে না জনগণের চাহিদা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম বাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯সনের ১৬অক্টোবর ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত পিটি ইনকা কোস দিয়ে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেন চালু করেন। চালুর পর থেকে এক্সপ্রেসটি সপ্তাহের বুধবার ব্যতিরেকে প্রতিদিন সকাল ৭টা ২০মিনিটে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে।

আগমন ও প্রস্থানকালে ট্রেনটি কাউনিয়া, রংপুর, বদরগঞ্জ, পার্ববর্তীপুর, জয়পুরহাট, সান্তাহার, মাধনগর, নাটোর, সেতুপূর্ব (অপারেশনাল স্টপেজ) বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। এতে ৬২৬টি আসন রয়েছে। তবে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম ফেরার সময় ৫৯৬ টি আসন থাকে। এরমধ্যে শোভন চেয়ার ৫১০টাকা, এসি চেয়ার ৯৭২টাকা এবং এসি বাথ ১৭৫০টাকা নির্ধারন করা হয়।

এদিকে এটি চালুর পর থেকে কুড়িগ্রাম জেলার জন্য বরাদ্দকৃত আসনের পরিমান নিয়ে অসন্তোশ দেখা দেয়। কুড়িগ্রাম এক্্রপ্রেস এর ৬২৬আসনের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ১২২টি আসন। ফলে এই পরিমান আসন দিয়ে কুড়িগ্রামের চাহিদা মিটছে না। এতে করে কুড়িগ্রাম জেলাবাসীর সুবিধার্থে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস চালু হলেও সুবিধা বঞ্চিত থাকছে বৃহৎ জনগোষ্ঠি। শুরু থেকেই এসমস্যা চলে আসলেও দিনদিন আরো প্রকট আকার ধারন করছে।

কুড়িগ্রামের রেল,নৌ,যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি সহ একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কুড়িগ্রামের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবীতে ইতোপূর্বে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার বরাবর আবেদন করা হলেও কোন সুফল মিলেনি।

অপরদিকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস শুধুমাত্র রংপুর জেলাতেই কাউনিয়া, রংপুর ও বদরগঞ্জ তিনটি স্থানে যাত্রা বিরতি করলেও কুড়িগ্রামের একমাত্র উপজেলা রাজারহাট রেলওয়ে স্টেশনের উপর দিয়ে চলাচল করা সত্বেও রাজারহাটে কোন যাত্রাবিরতি নেই। ফলে রাজারহাট উপজেলায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের যাত্রিদের ভোগান্তির শেষ নেই। অথচ রাজারহাটে যাত্রাবিরতি দেয়া হলে রাজারহাটের পাশাপাশি উলিপুর উপজেলার যাত্রীরাও উপকৃত হবে বলে জানান এলাকাবাসী।

এছাড়া জেলাবাসীর সুবিধার্থে এবং কুড়িগ্রাম থেকে চলাচল করলেও জেলার ৯উপজেলার মধ্যে ৭উপজেলার মানুষই সুবিধা বঞ্চিত থাকছে। এরমধ্যে চিলমারী, ভুরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ি উপজেলার মানুষ কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে যাত্রা করতে হলে তাদেরকে আগের রাতে এসে জেলা শহরে অবস্থান নিতে হয়। রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা ব্রক্ষ্মপুত্র নদী বিধৌত হওয়ায় এই দুই উপজেলার জনগণ কুড়িগ্রাম এক্্রপ্রেসে যাতায়াতের সুবিধা থেকে একেবারে বঞ্চিত।

অন্যদিকে উলিপুর উপজেলা থেকে কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের দুরুত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার হওয়ায় সেখানকার মানুষও তেমন একটা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন না।

কলেজ ছাত্র আহসান হাবিব কুইক বলেন, শুরু থেকেই রাজারহাট রেলওয়ে স্টেশনে স্টপেজ ও কুড়িগ্রামে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য রাজারহাটের সর্বস্তরের জনগন দাবী জানিয়ে আসলেও কোন লাভ হয়নি।

কুড়িগ্রাম রেল, নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আরিফ বলেন, প্রতিদিন গড়ে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় ১৭৬টি দিবা ও নৈশ্য কোচ ঢাকা যাতায়াত করে,যা সারা বাংলাদেশের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক। ফলে একটি চক্র বাসের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে যোগসাজসের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাঁধার সৃষ্টি করছে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রামের রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার শামসুজ্জোহা বলেন,আসন সংকটের বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। রাজারহাটে যাত্রা বিরতির বিষয়ে তার কিছু করার নেই বলে জানান।

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ্ সূফী নুর মোহাম্মদ বলেন,সহসাই এটা সমাধানের তেমন সুযোগ নেই,তবে ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন দেড়শো কোচ আসার কথা,আসলে এসমস্যার সমাধান হতে পারে।

 
Electronic Paper