‘মাছের খোঁজে নিরানন্দ’
তোফায়েল হোসেন জাকির, সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা)
🕐 ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ০১, ২০২২
রিমঝিম বৃষ্টিতে যৌবন ফিরেছে বর্ষার। টলমল পানির সৌন্দর্যে উঁকি দিচ্ছে খাল-বিল। এরই মাঝে লুকিয়ে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ। স্বাদে ভরা সেইসব মাছের খোঁজে হাঁটুকাঁদায় নেমেছে একঝাঁক শিশু-নারী-পুরুষ। তারা মনের আনন্দে মাছ ধরতে নামলেও বাড়ি ফিরছে নিরানন্দে। কারণ, একটাই, আগের মতো আর দেশী মাছ নেই খাল-বিলে।
শুক্রবার সকালে গাইবান্ধার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের পগালের বিলে দেখা যায় দেশীয় মাছ শিকারের দৃশ্য। এখানে বেশকিছু নারী-শিশু-পুরুষ কোমরপানি সেচে নানা প্রজাতির মাছ ধরার ব্যস্ত ছিলেন। তবে সেটি ছিল অপ্রতুল।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি জানায়, এক সময়ে বর্ষা মৌসুমে খাল-বিল, নদী-নালায় বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের ভরপুর ছিল। অনেকে শিশু-কিশোর তাদের শৈশব কাটাতো আইল বেঁধে পানি সেচে মাছ ধরে। এছাড়া গ্রাম-গঞ্জের সকল বয়সের মানুষই শিকারে ধুম পরছিল। এ যেন এক মহোৎসব ছিল। তখন অনেকে পেশা হিসেবেও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু সেইসব মাছ যেন এখন দুর্লভ হয়ে পড়েছে। আগের মতো অহরহ পাওয়া যায় না দেশি মাছগুলো।
বর্তমানে জলবায়ু প্রভাব আর প্রাকৃতিক পির্যয়ের কারনে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে উন্মুক্ত জলশয়ের মাছগুলো। শুধু তায় নয়, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নাব্যতা হ্রাস, কারেন্ট জালের ব্যবহার, ফসলি জমিতে কীটনাশক, পোনা মাছ নিধন, বিষাক্ত বর্জ ফেলাসহ আরও নানাবিধ কারণে কমেছে দেশি মাছের হার। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাল-বড়শি আর সেচ দিয়ে মাছ ধরার ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।
পগালের বিলে মাছ ধরতে আসা রফিকুল ইসলাম ও নাজমা বেগম জানা, ভাতের পাতে দেশি মাছের স্বাদ নিতে ছুটে এসেছেন। এখানকার একটি খালে আইল বেঁধে সেচ দিয়েছেন তারা। প্রায় তিন ঘণ্টা সেচ দিয়ে পানি শুকিয়ে সন্তোষজনক মাছ পাননি তারা।
হায়দার আলী নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, সারাদিন খাল সেচ দিয়ে কিছু সংখ্যক দেশি মাছ পাওয়া গেছে। তবে দুই দশক আগে এমন খালে প্রচুর পরিমান মাছ পাওয়া যেতো।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন কারনে কমে যাচ্ছে দেশিয় প্রজাতির মাছ। এসব মাছের প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবৈধ কারেন্ট জাল বিক্রি ও পোনা মাছ নিধন বিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে।