দিনাজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
গোলাম নবী দুলাল, দিনাজপুর
🕐 ৮:২৬ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২২
দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলায় চাঞ্চল্যকর হুমায়ুন কবীর হত্যা মামলায় বিচারক ৩ জনকে দোষী সাব্যস্তে মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত এবং ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও আলামত গোপন করার অপরাধে প্রত্যেককে ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করার রায় প্রদান করেছেন।
সোমবার বিকেল ৪টায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জর্জ ২ আদালতের বিচারক মোঃ মেহেদী হাসান মন্ডল তার আদলতে মামলার ৭ আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ মোহাম্মদ টুটুল জানান, গত ২০০৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার গরপিকলাই গ্রামের শহিদুল ইসলামের পুত্র হুমায়ুন কবীর বাড়ী থেকে বিকেলে বাজার করতে জয়নগর বাজারে যায়। ওই বাজারে পূর্ব শত্রুতার সূত্র ধরে আসামীরা সম্মিলিতভাবে হুমায়ুন কবীরকে গত ২০০৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টায় অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী এমআইবি ইট ভাটায় নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ছরিকাঘাতে তাকে হত্যা করে।
হুমায়ুন বাড়ি ফিরে না যাওয়ায় তার পরিবারের লোক জন পরের দিন ২১ সেপ্টেম্বর ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় ফুলবাড়ী উপজেলার গরপিকলাই গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর আলমের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মত স্থান জয়নগর বাজারের পূর্ব পার্শ্বে এমআইবি ইট ভাটার ইটের স্তুপের নিচ থেকে পুতে রাখা অবস্থায় হুমায়ুন কবীরের লাশ উদ্ধার করেন। পরে হুমায়ুন কবীর দিনাজপুর জুডিশিয়ার মেজিস্ট্রেট আদালতের নিকট এ হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকাররোক্তমূলক জবান বন্দী প্রদান করেন।
জবানবন্দীতে জাহাঙ্গীর আলমসহ তার সহযোগি একই গ্রামের আজাহার আলীর ৩ পুত্র রব্বানী, একরামুল, রেজাউল, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের পুত্র আতর আলী, সিরাজু উদ্দীনের পুত্র শাহেদ আলী ও নাসির উদ্দীনের পুত্র শরিফুল ইসলাম এই হত্যা ঘটনার সাথে জড়িত বলে বর্ণনা দেন।
মামলাটি ফুলবাড়ী থানার পুলিশ তদন্ত করে ওই ৭ আসামীকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করে আদালতে বিচারের জন্য অভিযোগপত্র পেশ করেন। মামলাটি বিচারামলে বাদী পক্ষের ১৬ জন স্বাক্ষী সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
বিচারে সাক্ষ্য প্রমাণ মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তার রায় ঘোষণায় আসামী রেজাউল ইসলাম, আতর আলী ও শরিফুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড রায় কার্যকর করার আদেশ প্রদান করেন।
অপর আসামী জাহাঙ্গীর আলম, একরামুল, রব্বানী ও শাহেদ আলীকে যাবজ্জীন সশ্রম কারাদন্ড এবং হত্যার পর লাশ গুম করার অপরাধে প্রত্যেকে ১ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। মামলাটি বাদী পক্ষের এপিপি শাহ মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল এবং আসামী পক্ষের এ্যাড. মোহাম্মদ ইসাহক ও এ্যাড. একরামুল আমিন পরিচালনা করেন।