ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নাটোরে ডালে ডালে আগুনরাঙা কৃষ্ণচূড়া

নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি
🕐 ৩:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২১

নাটোরে ডালে ডালে আগুনরাঙা কৃষ্ণচূড়া

দেশে চলছে লকডাউন। কমছে বায়ু দূষণের মাত্রা! এর বড় একটা প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে। দেশের সড়কগুলোতে দীর্ঘদিন ছিল না যানজট, অলস সময় পার করছিল ব্যস্ততম শহরটিও। কিন্তু রোদের দাপটে এখনও পুড়ছে প্রকৃতি। এর মধ্যে যেন প্রকৃতিতে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয় নানা রঙের ফুল। তার মধ্যে অনন্য কৃষ্ণচূড়া। এমন কড়া রোদে কৃষ্ণচূড়ার আবীর নিয়ে প্রকৃতি সেজে উঠেছে বর্ণিল রূপে। যেন প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার রঙয়ে আগুন জ্বলছে। নাটোরের পথে প্রান্তরে চোখ মেললেই দেখা যাবে আগুনঝরা কৃষ্ণচূড়ার সমাহার। 

স্থানীয় মিলন মাহামুদ রবি বলেন, এমন গাছের নিচে দাঁড়ালে মনে হয় কোনো রক্তিম বর্ণের উৎসব চলছে। মাথার উপর লাল সবুজের চাদোয়া, পায়ের নীচে ঝরা ফুলের বিছানা। যখন কৃষ্ণচূড়া ফোটে তখন এর রুপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরাও চলার পথে ক্ষণিক থমকে তাকান।

এ যেন চমৎকার রূপ, যেন কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়ার যখন ফুটে প্রকৃতির বুকে তখন সব বাঙালির হৃদয়ে দোলা দেয়। তরুণ কবি শওকত আরিফ লিখেছেন-

আগুন লেগেছে কৃষ্ণচূড়ায়
ফাগুন কেন দূরে।
সবুজ গাঁয়ে রঙ লেগেছে
পাখি ডাকছে সুরে!

কৃষ্ণচূড়া কৃষ্ণচূড়া
আহা কি চমৎকার,
কি বাহারি দেখতে তুমি
সৌন্দর্য অপার!

বাংলাদেশ জাতীয় হার্বেরিয়ামের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (প্রেষণ) ড. মাহবুবা সুলতানা বলেন, আগে বেশি গাছ তো ছিলই কিন্তু-জনসংখ্যার সাথে আবাসন, বাণিজ্যিক, শিল্প ও কৃষিকাজের প্রয়োজনে কাটা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।রাস্তায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কৃষ্ণচূড়া রোপন করা যেতে পারে।

সামাজিক বনাঞ্চল যশোর সার্কেল-এর প্রধান বন সংরক্ষক ও জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক পরিচালক মোল্যা রেজাউল করিম বলেন, এখন সময় কৃষ্ণচূড়ার রঙবাহারী রঙের আবীরে মাতোয়ারা হবার। চোখজুড়ানো আগুনরঙা প্রকৃতির এই কপোল তিলকের মাধুর্যে মাতোয়ারা হয়নি এমন মানুষের সন্ধান সম্ভবত পাওয়া যাবে না।

স্রষ্টার অকৃপণ হাতেই এর মনোহারী উপস্থাপনার জন্য আগুনকে রঙে রুপান্তর করে ফুল হয়ে ফুটিয়েছে এর ডালে ডালে। কৃষ্ণচূড়া জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফুটতে দরকার সূর্যালোকের বিশেষ কৌণিক অবস্থান ও তাপমাত্রার সামঞ্জস্যপূর্ণ উপস্থিতি। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থাও সহ্য করতে পারে।

কৃষ্ণচুড়ার মুল আবাস মাদাগাস্কার হলেও ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণচূড়া শুধু দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ পশ্চিম ফ্লোরিডা, টেক্সাসের রিও গ্রান্ড উপত্যকায় পাওয়া যায়। এছাড়াও কোস্টারিকা, পানামাসহ মধ্যম তাপমাত্রার দেশেও এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

গ্রীষ্মের খরতাপে দগ্ধ ধরাতলে ক্লান্ত মানবতার মাথায় সুশীতল ছায়া ও নয়নে তীব্র রঙের ঝলকানিতে মুগ্ধকর আবেশ ছড়াতে কৃষ্ণচূড়া ফুল জানান দেয় তার সৌন্দর্যের।

 

 
Electronic Paper