ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সড়ক সংস্কারে ধীরগতি, দুর্ভোগ চরমে

সুকুমল কুমার প্রামাণিক, রানীনগর (নওগাঁ)
🕐 ৩:২৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৭, ২০২১

সড়ক সংস্কারে ধীরগতি, দুর্ভোগ চরমে

নওগাঁর রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ না হওয়ায় খানাখন্দে ভরপুর হয়ে গেছে সড়কটি। রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোনোরকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় খানাখন্দেও ধুলা আর বালিতে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ? এমন ভাবনা যেন সাধারণ মানুষকে ব্যাকুল করে তুলেছে। দ্রুত এই সড়কের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল। তিনি বলেন, জনস্বার্থে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে।

জানা যায়, রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি রানীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটি প্রশস্ত এবং মজবুত পাকাকরণের জন্য গত ২০১৮ সালে টেন্ডার দেওয়া হয়।

দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ২৬টি কালভার্ট ও চারটি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোনোরকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তাজুড়ে ছোট বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে খানাখন্দে ও ধুলা আর বালিতে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন।

পথচারী ও রাস্তার যাত্রী মকলেছুর রহমান, নাহিদ হোসেন, বকুল, হাসান, এমরানসহ অনেকেই বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারি মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এই সড়কের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।

যানবাহন চালক খালেদ, একরামুল, হাবিব, রুবেল, জাফের আলীসহ আরও অনেককেই বলেন, এই সড়কে আমাদের নিত্য দুর্ভোগ। যাত্রীরা রাস্তার ধুলাবালি ও রাস্তার খানাখন্দের দুর্ভোগের কারণে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে চায় না। রানীনগর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত যেতে আগে সময় লাগত ১০ মিনিট এখন সড়কের এমন দশার কারণে যেতে সময় লাগে ৩০ মিনিট।

রানীনগর থেকে কালীগঞ্জ যেতে প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। এই সড়কটিকে ঘিরে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ চালু করেন আবার কাজ বন্ধ রেখে আবার চলে যান। যেন দেখার কেউ নেই। উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। দ্রুত এই সড়কের কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

 
Electronic Paper