ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বগুড়ায় ধ্বংসযজ্ঞে মেতেছিল তারা

টি এম মামুন, বগুড়া
🕐 ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০৩, ২০২১

বগুড়ায় ধ্বংসযজ্ঞে মেতেছিল তারা

মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে দেখা গেছে চাঁদে- এমন কথা প্রচার হওয়ার পর ২০১৩ সালের ৩ মার্চ বগুড়ায় সংঘটিত হয় ধ্বংসযজ্ঞ। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ, লুটপাট, হত্যা সবকিছুই হয়েছে এই দিনে। আত্মরক্ষার্থে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও কঠোর হতে হয়েছিল সেদিন। 

৩ মার্চ ভোর ৩টার দিকে দা, বঁটি, রড, লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে বলে মসজিদ থেকে মাইকিং করে প্রচার করে জামায়াত-শিবির। তারা উত্তেজিত করে তোলে মানুষকে। শুরু হয় থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাওসহ নানা ধ্বংসাত্মক কর্মকা-। বগুড়া জেলা শহর, শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ ও গাবতলী উপজেলা বিভিন্ন সড়কে বেরিয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। সব জায়গায় হামলা চালিয়েছে তারা। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে অ্যাম্বুলেন্স, সরকারি গাড়ি ও অফিস। করেছে লুটপাট। সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে ৩ নারী ও শিশুসহ ১৩ জন। পঙ্গুত্ববরণ করেছের ১০ পুলিশ সদস্য।

হামলাকারীদের দ্বারা আক্রান্ত তৎকালীন জেলার বিভিন্ন থানার পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) রিয়াজ উদ্দিন, মাহমুদুল আলম, রহমানসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে। মোবাইল ফোন রিসিভ করে একটাই কথা প্রথমে বলেন তারা, ‘ভাই আমার জন্য দোয়া করবেন। ঘেরাও করে রেখেছে জামায়াত-শিবির ও তাদের সমর্থকরা; জানি না, আজ কী হবে, কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন।’ এসব ঘটনায় সব মিলিয়ে ৫৬টি মামলায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫টি মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল এবং বাকি ৫১টি মামলায় ৮৪৩ জনকে গ্রেফতার করে ৩১২০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার (বর্তমান র‌্যাব-৪ এ কর্মরত অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সেদিন ৩ মার্চ পরিস্থিতি অনুমান করে তিনি ফোনে তৎকালীন জেলা প্রশাসক সারোয়ার মাহমুদকে (অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব) উত্তেজিত এলাকাগুলোতে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়ে অনুরোধ করেন। ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। তারপরও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় জামায়াত-শিবির ও তাদের সমর্থকরা। সাংবাদিক ও সচেতন বগুড়াবাসী, র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক বলেন, এমন ঘটনা যেন কখনোই না ঘটে আমারা সৃষ্টিকর্তার কাছে এমন প্রার্থনাই করি। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, এমন ধ্বংসযজ্ঞ কখনই কাম্য নয়। মানুষকে কানকথা শুনে কিছু করা যাবে না, আরও বেশি সচেতন হতে হবে। পুলিশ সজাগ রয়েছে, এমন ঘটনা ঘটার কোনো রকম সম্ভাবনা এখন নেই।

 
Electronic Paper