ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সন্ধ্যার পরে হারিকেন আর চোখে পড়ে না

আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
🕐 ৩:২৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ০২, ২০২১

সন্ধ্যার পরে হারিকেন আর চোখে পড়ে না

রোকেয়া খাতুন। বয়স আশির উপরে। হারিয়ে যাওয়া হারিকেন নিয়ে গল্পে গল্পে কথা হয় তার সাথে। হন্ধার পরে আমাগো গ্রারামে অহন আর হরিকেন চোখে পরে না। বাপুরে গ্রারামগঞ্জের বাড়ী এহোন আর হারিকেন দেহা যায় না। হামগো গাও গ্রারামে হন্ধার পরে আর হারিকেন চোহে পাড়ে না। হামগো গ্রারামের ঝিয়েরা হন্ধার অ্যাগে ছেড়া নেকরা দিয়া হারিকেনের কাচও ছাপ করতে দেখা যায় না। তাই হারিকেনের কাঁচ ছাপ করা নিয়ে বৌদের সাথে হন্ধার পর কত..... না ঝগড়া হতো। এহনকার সময়ে ঘরে ঘরে কারেন্ট আসাতে হারিকেন নামটি আমাগো ছেলে মেয়েদের কাছে বেশ অপরিচিত।

বিলুপ্তর পথে গ্রাম বাংলার ঐতিস্য হারিকেন বাতি। গ্রামীন জীবনে রাতের অন্ধকারে দুর করতে একটা সময় দেশের ৬৪ হাজার গ্রামের মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন (কুপি বাতি)। দেশের চাকরিসহ নানা পেশার উচ্চ পর্যায়ের থাকাদের মধ্যে খোজ করলে লক্ষ্য করা যাবে অনেকেই পড়ালেখা করেছেন হারিকেনের ক্ষুদ্র আলোয়। গৃহস্থলী এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনে ব্যাপক চাহিদা ছিল।

হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরণের বৈদ্যুতিক বাতি। বৈদ্যুতিক এই চায়না বাতির কারনে শহরে হারিকেনরে ব্যবহার একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। সেই আলোর প্রদীক এখন গ্রাম থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে। হারিলে জালিয়ে বাড়ীর উঠানে বা বারান্দায় পড়াশোনা করত শিক্ষার্থীরা। রাতের বেলায় পথ চলার ব্যবহৃত বাতি ছিল হারিকেন। হারিকেনের জালানি আনার জন্য প্রতি বাড়ীতে ছিলো কাঁচের বিশেষ ধরনের বোতল। সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হত ঘরের খুটির কান্তার সাথে। হাটের দিনে সেই রশি লাগানো বোতন নিয়ে হাটে যেতে হতো হাটে।

এ দৃশ্য বেশি দিনের নয়। পল্লী বিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দশা চোখে পড়ে না। প্রাচীর বাংলার গ্রামীন ঐতিহ্য কুপি বাতি ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি। গ্রামে আমাবসার রাতে মিট মিট করে আলো জালিয়ে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখন তাড়া করে। বাংলা সাহিত্যে অন্যতম ডাক হরকরা গল্পর নায়ক তার এক হাতে হারিকেন আর অন্য হাতে বল্লব নিয়ে রাতের আধারে ছুটে চলে কার কর্ম পালনে।দিনদিন প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে। হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের দিকে ঝুকছেন। তাঁপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ সহ জালানি কাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিপুলÍ পথে।

চার্জ লাইট সৌর বিদ্যুৎসহ বেশ কিছু আলোর জোগান থাকায় এখন আর কেউ’ই ঝুকছেন না হারিকেনের দিকে। তবে প্রবীণদের মতে এক সময় হারিকেন খুজতে হবে এবং হারিকেনের কদন আসবে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবেও না হারিকেন কি? ও হারিকেনের ইতিহাস। চায়না জাপান সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ খুব দ্রুত চার্জ সংরক্ষনকারী আলোর প্রযুক্তি উদ্ধোবন করছে। এক সময় হয়তো চিরতরে বিলুপ্ত হবে হারিকেন।

হিদাসকোল রনিরহিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্য হারিকেন এখন আর চোখে দেখা যায় না। এক সময় আমাদের মা-দাদীরা হারিকেন জালিয়ে সাংসারিক কাজকর্মসহ ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া জন্য হারিকেন ছিল অন্যতম। বর্তমান সময়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ হওয়াতে আজকের ছেলে মেয়েদের কাছে হারিকেন নামটি বেশ অপরিচিত।

 
Electronic Paper