ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হাইড্রোলিক জরিপ ছাড়াই বালুমহাল ইজারা, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
🕐 ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১

হাইড্রোলিক জরিপ ছাড়াই বালুমহাল ইজারা, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

রাজশাহীতে হাইড্রোলিক জরিপ ছাড়াই বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বালুমহাল ইজারা দেওয়ার আগে নির্ধারিত এলাকার হাইড্রোলিক জরিপ করতে হবে। এর মাধ্যমে বালুর মজুদ নির্ধারণ করে ইজারামূল্য ঠিক করতে হবে। বালুমহাল নীতিমালা আইনেই এটা উল্লেখ আছে। কিন্তু জরিপ ছাড়াই রাজশাহীর চরশ্যামপুর ও দিয়াড়খিদিরপুর বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। এই বালুমহাল ইজারা নিয়ে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

 

বাংলা ১৪২৭ বর্ষের ১০ মাসের জন্য এই বালুমহালটি ইজারা নিয়েছে ‘মেসার্স রজব অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এবার ইজারামূল্য পরিশোধ করেছে ছয় কোটি ২৪ লাখ টাকা। অথচ ১৪২৩ থেকে ১৪২৫ বঙ্গাব্দে বালুমহালটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল নামমাত্র মূল্যে।

১৪২৬ বঙ্গাব্দেও মাত্র দুই কোটি ২০ লাখ টাকায় বালুমহালটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল। এবার হাইড্রোলিক জরিপ ছাড়াই বিপুল টাকায় বালুমহালটি ইজারা নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে রজব অ্যান্ড ব্রাদার্স। এই প্রতিষ্ঠানটির নামে বালুমহালটি ইজারা নেওয়া হলেও এর সঙ্গে আরও কিছু ব্যবসায়ী যুক্ত রয়েছেন।

তারা প্রত্যেকেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষতি কাটাতে রজব অ্যান্ড ব্রাদার্সের পক্ষ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি আবেদন দিয়ে বালুমহালটি আরও ছয়মাস তাদের কাছে রাখার দাবি জানানো হয়েছে। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব জসিম উদ্দিন পাটওয়ারী এক চিঠিতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে এ ব্যাপারে একটি মতামতসহ প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

ইজারা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের আবেদনে বলা হয়েছে, রাজশাহীর বালু সিন্ডিকেট চার বছর ধরে বালুমহালগুলো জিম্মি করে রেখেছিল। ১৪২৭ বঙ্গাব্দের ইজারা দেওয়ার সময় স্বচ্ছতা থাকলে তারা উন্মুক্ত দরপত্রে ছয় কোটি ২০ লাখ টাকায় চরশ্যামপুর ও দিয়াড়খিদিরপুর বালুমহাল ইজারা নেয়। হাইড্রোলিক জরিপ করে বালুমহালের বালুর মজুদ নির্ধারণ করা না হলেও প্রতিযোগিতায় বিপুল টাকায় বালুমহালটি ইজারা নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে একটিমাত্র ভঙ্গুর কাঁচা রাস্তা ও বাঁধের কারণে বালু উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হয়। তাছাড়া কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে একটা লম্বা সময় বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। এ ছাড়া বালুমহালের মৌজার সীমানা নির্ধারণ করা না থাকায় স্থানীয় এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণেও বালু উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হয়।

ফলে ইজারামূল্যের অর্ধেক টাকাও তুলতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। আবেদনে আরও বলা হয়, হাইড্রোলিক জরিপ না করার কারণে বালুমহালের বালুর মজুদ নিয়ে তাদের কোনো ধারণা ছিল না। তারপরও সর্বোচ্চ দরে বালুমহালটি ইজারা নেওয়া হয়। এর আগের চার বছরে বালুমহালটির জন্য সরকার যে রাজস্ব পেয়েছে এবার ১০ মাসের জন্যই তার তিনগুণ অর্থ দিয়েছে মেসার্স রজব অ্যান্ড ব্রাদার্স। কিন্তু যে ধারণা করে বালুমহালটি ইজারা নেওয়া হয়েছিল সেই পরিমাণ বালু সেখানে ছিল না।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম বলেন, ইজারাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে একটি মতামতসহ প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। দ্রুতই সেটি পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

 
Electronic Paper