ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আমের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

আসাদুল্লাহ আহমদ, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)
🕐 ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১

আমের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

ফাগুনের শুরুতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে সোনালি মুকুল। আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্য স্থানের মতো গোমস্তাপুরেও আম গাছগুলোতে মুকুলে-মুকুলে ছেয়ে গেছে সমগ্র উপজেলা। আম গাছ ও মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের আমচাষিরা।

মুকুলের আগমনে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে এ উপজেলার বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা। আমচাষি ও বাগান মালিকরা এ মৌসুমকে ঘিরে গাছে গাছে মুকুল দেখে সোনালি স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছে।

মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে এলাকার আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠেছে। আম গাছগুলোতে মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌমাছির গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। শীতের স্নিগ্ধতার মধ্যেই শোভা ছড়াচ্ছে সোনালি মুকুল। ঠাণ্ডাজনিত কারণে দেরিতে মুকুল আসলেও আমচাষিরা বেশ খোশ মেজাজেই রয়েছে।

এরমধ্যে আমচাষিরা এ মুকুলকে ঘিরে তাদের ব্যবসার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে শুরু করে দিয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমচাষিরা মুকুল ও আমগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতি আম মৌসুমে তিনটি ধাপে এ আম গাছগুলো বিক্রি হয়ে থাকে। এর মধ্যে পাতাতে একবার, মুকুলে একবার ও সর্বশেষ আম ফলে বিক্রি হয়ে থাকে এ আম গাছগুলো। ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী খিরসাপাত আম জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এ অঞ্চলের আমচাষিরা বেশ খোশ মেজাজেই রয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৪ হাজার ২ শত ৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। সর্বমোট আম গাছ রয়েছে ৩৪ হাজার ১ শত ২৫টি। ঠাণ্ডাজনিত কারণে মুকুল দেরিতে আসলেও এখন বর্তমানে আবহাওয়া মুকুলের অনুকূলেই রয়েছে। বর্তমানে উপজেলার আম গাছগুলোতে প্রায় ৭৫ ভাগ মুকুল এসেছে। আবহাওয়া এরকম অনুকূলে থাকলে আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ মুকুল এ আম গাছগুলোতে দেখা যাবে। বর্তমানে আবহাওয়া মুকুলের অনুকূলে থাকায় এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে।

উপজেলার আমচাষি তোফাজ্জল হোসেন জানান, বর্তমানে আবহাওয়া আমের মুকুলের জন্য বেশ উপযোগী। আমের মুকুলে বিভিন্ন ধরনের পোকা ও মহালাগার কারণে বাজারে সরবরাহকৃত বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক বিষ প্রয়োগ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, সম্প্রতি শৈত্যপ্রবাহের কারণে আমের মুকুল ফুটতে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে আবহাওয়া মুকুলের অনুকূলে রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পোকা ও মহালয়া থেকে আমের মুকুলগুলোকে রক্ষা করার জন্য কৃষকদেরকে বিভিন্ন কৃষক সমাবেশ ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক বিষ প্রয়োগের ক্ষেত্রে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া এ কীটনাশক তিন উপায়ে প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রথমবার আমের মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়বার আমের গুটি ধরার সঙ্গে সঙ্গে ও তৃতীয়বার যখন আমটি মার্বেল আকৃতি হবে সে সময় বিষগুলো প্রয়োগ করতে হবে।

এছাড়াও কৃষকদেরকে দুই মাস অন্তর অন্তর সুষম সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কবলে না পড়লে এ বছর আমের ফলন ভালো হবে। এ ছাড়াও যেকোনো পরামর্শের জন্য কৃষকদেরকে সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

 
Electronic Paper