ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কথিত এনজিও কর্মকর্তার প্রতারণায় দিশেহারা শতাধিক তরুণ-তরুণী

নাজমুল হাসান, নাটোর
🕐 ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২১

কথিত এনজিও কর্মকর্তার প্রতারণায় দিশেহারা শতাধিক তরুণ-তরুণী

নাটোরে এনজিও কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আজীম সৌরভের প্রতারণায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শতাধিক মানুষ। ইতোমধ্যে চাকরির বেতন না দেওয়াসহ জামানতের তিন লক্ষাধিক টাকা নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে প্রতারক সৌরভ। পরে ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করলে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত সৌরভকে গ্রেফতারে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ।

নাটোর সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান জানান, কমিউনিটি সেইফ হেলথ পাইলট প্রকল্প নামে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালানোর কোনো তথ্য জেলা সিভিল সার্জন অফিসে নেই।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, স্বাস্থ্যসেবার নামে কথিত একটি প্রকল্পে সৌরভ নামে এক ব্যক্তি শতাধিক তরুণ তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ আজীম সৌরভ স্থানীয় একটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। তাতে উল্লেখ করা হয় ‘কমিউনিটি সেইফ হেলথ পাইলট’ নামে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার একটি প্রকল্পে গ্রাম্য ডাক্তার এবং কমিউনিটি অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রকল্পের কাজের সম্পর্কে বলা হয়, নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে গরিব অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান।

তাতে ১১ থেকে ১৬ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে চাকরির প্রত্যাশায় ১১০ জন তরুণ-তরুণী প্রাথমিক জামানত হিসেবে তিন হাজার তিনশ পঞ্চাশ টাকা সৌরভকে প্রদান করে। পরে ১৪ জন জামানতের টাকা ফেরত নিয়ে চলে গেলে কর্মী সংখ্যা ৯৬ তে এসে দাঁড়ায়। তখন থেকে ট্রেনিং, সেমিনারসহ নানা বিষয়ে কেটে যায় আরও কয়েক মাস। পরে গত সেপ্টেম্বরে কমিউনিটি অফিসার ও গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়।

এসব কর্মীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার নানা প্রলোভন দেখিয়ে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার সদস্য ফরম পূরণ করিয়ে নেয় সৌরভ। পরে নভেম্বরে কর্মী হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে মাস শেষে বেতন দেওয়ার কথা বলে সৌরভ। নভেম্বর ও ডিসেম্বর এই দুই মাস দায়িত্ব পালন করলেও কোনো বেতন-ভাতা না পেয়ে সৌরভের কাছে বারবার ধরনা দেন কর্মীরা। এরই একপর্যায়ে সৌরভ সকলকে ১০ জানুয়ারি বেতন দেওয়ার কথা বলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হাজির হতে বলে।

পরে ঐ দিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে সৌরভের মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে তার বাড়ি ঘেরাও করে কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

পরে ১১ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন প্রতারণার শিকার কর্মীরা। একই দিন রাতে রাকিব হাসান নামে এক কর্মী বাদী হয়ে চাকরির নাম করে প্রতারণার অভিযোগ এনে ইমতিয়াজ আজীম সৌরভ ও তার সহযোগী ডা. আবু সালেহকে আসামি করে নাটোর সদর থানায় মামলা করেন।

 
Electronic Paper