আদমদীঘিতে কমছে খেজুর গাছ
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
🕐 ৭:০৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০২, ২০২০
প্রকৃতির বিরূপ খেয়ালে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। আগের মত এখন আর হাত বাড়ালেই মিলে না মধুরস। নেই আর গাছিদের তেমন আনাগোনা, শীতের সকালে কাউকে রৌদে বসে মনের আনন্দে মুড়ি দিয়ে খেজুর রস খেতে দেখা যায় না।
খেজুর গাছের চারা রোপণ না করায় পুরাতন খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। হয়তো একদিন মানুষ ভুলেই যাবে সুস্বাদু খেজুর রস খাওয়ার স্বাদ।
দেশে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও বনজ বৃক্ষরোপণ করা হয়।
প্রায় হারিয়ে যেতে বসা তালগাছ রোপণ কার্যক্রম চলছে। এতে সারা দেশের ন্যায় আদমদীঘি উপজেলার গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সড়কে প্রায় ২৫ হাজার তালগাছ বপন করা হয়, কিন্তু খেজুর গাছ রোপণের কোনো উদ্যোগ নেই। ১০/১২ বছর আগেও প্রতিটি গ্রামে বিপুল খেজুর গাছ ছিল। সে সময় দল বেঁধে গাছিয়ারা গ্রামে এসে আস্তানা গড়ে তুলছিল।
খেজুর গাছ লিজ নিয়ে রস নামানোর কাজ এবং খেজুর রস, লালি ও পাটালি গুড় তৈরি করে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করতেন। গাছিয়াদের তৈরি পাতলা লালি দিয়ে মুড়ি, রুটি, ফুরফুরি, ভাপা পিঠা, দুধভাত কিংবা গরম ভাত খাওয়ার মজাই আলাদা। বর্তমানে আগের মতো আর গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছ দেখা যায় না।
এখন আর হাত বাড়ালেই মিলে না খেজুর রস বা খেজুর রসের লালি। উপজেলার কাশিমালা গ্রামের মুকুল হোসেন ও তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক নাছির মন্ডল, ইয়াছিন আলীসহ অনেকেই জানায়, খেজুর গাছের পরিচর্যা না থাকায় আগের মতো আর রস বের হয় না, শুকিয়ে মরে যাচ্ছে অনেক গাছ। খেজুর গাছের চারা রোপণ করা না হলে ক্রমেই হারিয়ে যাবে এই গাছ।
খেজুর গাছ শুধু রসই দেয় না তার ফল ভিটামিন যুক্ত খাবার, কাঠ জ¦ালানি ও সাংসারিক গৃহস্থালি কাজেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গ্রামগঞ্জে অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুর গাছগুলো মাঝে মধ্যে নজরে পড়লেও নেই সেইগুলোর জৌলুস। এখন কেউ আর নতুন করে খেজুর গাছ লাগানোর উদ্যোগই নেয় না। ফলে কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে এই খেজুর গাছ।
খেজুর রস যেন বিরল হয়ে দাঁড়িয়েছে অত্র উপজেলাবাসীর। হয়তো আগামী প্রজন্মের অনেকেই খেজুর রস, গুড় কিংবা লালির কি স্বাদ তা হয়তো জানতেই পারবেন না। এখনই গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে তালগাছের পাশাপাশি খেজুর গাছ লাগানোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে হয়তো একদিন খেজুর গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।