ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সিরাজগঞ্জে সাত পৌর নির্বাচন, প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ

এইচএম আলমগীর কবির, সিরাজগঞ্জ
🕐 ৬:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০২, ২০২০

সিরাজগঞ্জের সাত পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি ডিসেম্বরে। এর মধ্যে শাহজাদপুর পৌরসভার তফসিল ঘোষণা হয়েছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর এই পৌরসভার নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌর এলাকায় নির্বাচনী হাওয়া শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে ময়দানে ও পাড়া-মহল্লায় সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। অনেকেই ভোটারদের সঙ্গে উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশসহ নিজের ছবি সম্বলিত লিফলেট নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ভোটারদের দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। সবচেয়ে বেশি দৌড়ঝাঁপ চলছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নিয়ে। কোনো কোনো পৌরসভায় মেয়র পদে ৬-৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে নেমেছেন। মনোনয়ন পেতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও বসে নেই। বর্তমান মেয়ররা নিজেদের বিগত বছরের অর্জনের ফিরিস্তি তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে সমর্থন কামনা করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি আলহাজ অ্যাড. কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাকে জয়ী করার জন্যই আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।

সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, কেন্দ্র থেকে পৌরসভা নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে দলের অনেকেই মনোনয়নের আশায় মাঠে সরব হয়েছেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্যই কাজ করবে নেতাকর্মীরা। দলের বাহিরে কেউ না।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, এই পৌরসভায় বিএনপির সমর্থক বেশি রয়েছে, আশা করি দল যাকে মনোনয়ন দেবে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে এবং তিনি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হবেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, জেলায় ৭টি পৌরসভার মধ্যে শাহজাদপুর পৌরসভা বাদে বাকি ৬টি পৌরসভায় সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বর্তমান মেয়রদের মেয়াদের পাঁচ বছর শেষ হতে যাওয়ায় এসব পৌরসভায় আগামী ডিসেম্বরে ভোটের কথা রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী সাত জন। প্রার্থীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ অ্যাড. কে এম হোসেন আলী হাসান, বর্তমান মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হাজী ইসাহাক আলী ও ফিরোজ তালুকদার, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহম্মেদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সম্পাদক দানিউল হক দানি মোল্লা।

অন্যদিকে, বিএনপির প্রার্থী পাঁচজন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন, জেলা বিএনপির সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুর কায়েস সবুজ, রাশিদুল হাসান রঞ্জন, মুন্সি জাহিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু এর নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাসহ কোনো গণসংযোগ দেখা যায়নি। তবে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

তাড়াশ পৌরসভা : ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ১০,৮৫০ জন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী ৭ জন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হক, সাধারণ সম্পাদক, সনজিত কর্মকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রজত ঘোষ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু শেখ, মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বিদ্যুৎ ও তাড়াশ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক মির্জা শামসুল ইসলাম। উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আব্দুল বারিক খন্দকার ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মুনসুর রহমান বাচ্চু।

বেলকুচি পৌরসভা : ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৫৭,৫৯৭ জন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী ৩ জন।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আশানুর বিশ্বাস, পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মজিদ খান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা। এখন পর্যন্ত অন্য দলের প্রচার-প্রচারণা দেখা যায়নি।

রায়গঞ্জ পৌরসভা: ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ১১.৮০০ জন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী ৪ জন। প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র আব্দুল্লাহ আল-পাঠান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আখসারুল আলম খোকন, পৌর আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এম.এম হাসানুজ্জামান সুলতান। বিএনপি’র প্রার্থী হলেন, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম। (স্বতন্ত্র প্রার্থী) সাবেক মেয়র মো. মোশারফ হোসেন এর নাম পাওয়া গেছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত অন্য কোনো দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাসহ গণসংযোগ দেখা যায়নি।

শাহজাদপুর পৌরসভা : প্রথম ধাপে নির্বাচন আগামী ২৮ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা হওয়ায় এই পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিটি পাড়া-মহল্লা সরগরম হয়ে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায়। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৫৪,৬০২ জন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী ৮ জন। প্রার্থীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র হালিমুল হক মিরু, সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বেপারী, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তরু লোদী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম শাহু, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাহবুবে ওয়াহিদ শেখ কাজল, কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুর রহিম। বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ৪ জন। প্রার্থীরা হলেন, শাহজাদপুর পৌর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক ইমদাদুল হক নওশাদ, যুগ্ম-আহবায়ক আলহাজ্ব মো. আইয়ুব

আলী, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রাজা, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মাহমুদুল হাসান সজল। বাংলাদেশ ইসলামী যুব আন্দোলন শাহজাদপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মদ ইমরান খন্দকার।

কাজিপুর পৌরসভা : ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ১২,৬৩৩ জন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী ৩ জন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান মেয়র হাজী নিজাম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাজেদুল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক হান্নান তালুকদার, স্থানীয় স্কুল শিক্ষক ফরিদ মাস্টার ও আমিন সরকার। এখন পর্যন্ত এই পৌরসভায় অন্য কোনো দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাসহ কোনো গণসংযোগ দেখা যায়নি।

উল্লাপাড়া পৌরসভা : ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৭,১০২ জন। পুরুষ ১৮,৬০১ জন ও মহিলা ১৮,৫০১ জন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী ৭ জন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন, পৌর আ.লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র এস এম নজরুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র ও সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আরজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক মাহবুব সারোয়ার বকুল, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল, উপজেলা আ.লীগের সদস্য জাহিদুজ্জামান কাকন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর আহসান আলী সরকার। এখন পর্যন্ত এই উপজেলায় অন্য কোনো দলের প্রার্থীদের প্রচার- প্রচারণাসহ কোনো গণসংযোগ দেখা যায়নি।

 

 

 

 
Electronic Paper