ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের অভাব, বাড়ছে ডায়রিয়া-কৃমিজনিত রোগ

আশরাফুল আলম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)
🕐 ৬:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২০

স্যানিটেশনের অভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার একটি অবহেলিত আদিবাসীর জনগোষ্ঠী গুচ্ছগ্রামের ৩২টি পরিবারের সদস্য মলত্যাগ করছে ঝোপঝাড়ে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করতে পারছে না এখানকার বাসিন্দারা। পাচ্ছে না সরকারি সহায়তা। তাই বাধ্য হয়ে ভোরের সূর্য উঠার আগেই ৩২টি পরিবারের নারী-পুরুষ মিলে প্রায় ১৫০ জন মানুষকে সেরে নিতে হয় মলত্যাগের কাজ। এতে তারা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া আমাশয়সহ কৃমিজনিত রোগে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নেকমরদ ঘনশ্যামপুর মৌজার একটি পুকুরের পাহাড় সরকারি সম্পত্তি হওয়ার সুবাদে, গত বছরের জুন মাসে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন, তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার সোহাগ চন্দ্র সাহা।

ভূমিহীনদের মধ্যে রয়েছেন আদিবাসী হিন্দু মুসলিম ও হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষজন। তারা মিলেমিশে সেখানে বসবাস করলেও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের অভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম সমস্যায় রয়েছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।

ওই পাড়ার মালতি রাণি ও শান্তু পাহানসহ অনেকে বলেন, গত বছরে ইএসডিও নামক এনজিও’র সহায়তায় এবং আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা এখানে আমাদের বাসস্থানের জন্য তিন শতক জমি নির্ধারণ করে ৩২টি পরিবারকে বসবাস করার সুযোগ করে দেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঋণ করে মাথা গোঁজার ঘর করলেও অর্থনৈতিক অভাবে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার স্থাপন করতে আমরা পারিনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী দফতরে ঘুরেও আমরা সরকারিভাবে স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারিনি।

ভুক্তভোগীরা বলেন, মিলেমিশে কিছু ছোট সাইজের টিউবওয়েল স্থাপন করে পাড়ার পানি সরবরাহের ভোগান্তি কিছুটা কমিয়েছি। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার। তারা আক্ষেপ করে বলেন, দেশের নাগরিক হয়েও আমরা অবহেলিত। কেউ আমাদের খোঁজ রাখে না। যা করতে হয় তা লড়াই করেই আদায় করে নিতে হয়। তাই আমরা নিজেদের অবহেলিত হিসেবে দাবি করি।

ভুক্তভোগীরা সরকারের ঊর্ধ্বধন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থার পাশাপাশি তাদের ঘরবাড়িগুলো যেন সরকারি সহায়তার মধ্যে আনা হয়।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ১৩টি গুচ্ছগ্রামকে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় আনতে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দিয়েছি। অনুমোদন পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, এখনো মানুষ ঝোপঝাড়ে মলত্যাগ করছে এটা ভাবতে অবাক লাগছে। বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

 
Electronic Paper