মাত্র দুই ঘন্টায় বিদ্যুৎ পেল সুখীতন বেওয়া
আশরাফুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
🕐 ৫:১৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২০
‘প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার বিদ্যুৎ হবে সবার’ আর তা বাস্তবায়ন হলে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সুখীতন বেওয়ার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। মূলতঃ সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে মাত্র দুই ঘন্টায় হতদরিদ্র সুখীতন বেওয়া (৭০) বিনামূল্যে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেন।
এদিকে মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার পূরণ করতে সুখীতন বেওয়াকে বিদ্যুৎ দিতে প্রায় ৬০ হাজার সরকারি টাকা ব্যায় করেছেন তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
জানা গেছে, গত দুই দিন আগে কোন এক সোশ্যাল মিডিয়ার আইডিতে তাড়াশ উপজেলার বারুহাঁস ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের সুখীতন বেওয়া (৭০) এর দারিদ্র্যতাকে নিয়ে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। যা দেখে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা ২৫ কেজির এক বস্তা চাল তার বাড়িতে পৌঁছে দেন তাৎক্ষণিক।
আর তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিদর্শক জহরুল ইসলাম ওই স্ট্যাটাস দেখে বৃদ্ধাকে কিছু খাদ্য সামগ্রী দিতে ছুটে যান তার বাড়িতে। সেখানে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করেন বৃদ্ধার বাড়ির আশপাশে সকলের বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে কিন্ত বৃদ্ধার বাড়িতে কোন বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।
এসময় সুখীতন বেওয়া তাকে জানান, তার একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন। তার পাঁচটি সন্তান নিয়ে অভাব-অনাটনের কারণে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেননি তারা।
এদিকে তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিদর্শক জহরুল বিষয়টি তাৎক্ষণিক তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আশরাফ আলীকে জানান। এরপর যা হয়েছে তা যেন সুখীতনের স্বপ্নের মতো।
গত মঙ্গলবার সকালে তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আশরাফ আলী, এজিএম (কম) রাব্বুল হাসান, পরিদর্শক জহরুল ইসলাম, লাইন টেকনিশিয়ান হায়দার আলীসহ ১০-১২ জনের একটি দল বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বৈদুত্যিক সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছে যান সুখীতন বেওয়ার বাড়িতে। সেখানে নির্মাণ করা হয় এলটি আন্ডার বিল্ড দুই স্প্যান ৩০০ ফিট সরবরাহ লাইন। এর সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে করা হয় ঘর ওয়ারিং।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী জামানতের টাকাসহ ওয়ারিংর খরচ বহন করেন পরিদর্শক জহরুল ইসলাম। এর মধ্যে কেটে যায় দুইঘন্টা। পরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্থানীয় সংবাদকর্মীদের নিয়ে সুখীতন বেওয়াকে দিয়ে সুইচ চেপে উদ্বোধন করেন তার বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ।
এদিকে বয়োবৃদ্ধ সুখীতন বেওয়া বলেন, ‘জীবনের শেষ সময়ে শেখের বিটি আমাকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় আমি তার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করবো।’
তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আশরাফ আলী বলেন, মুজিববর্ষে অঙ্গীকার পূরণে আমরা দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।