ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অল্প জনবলে বিপুল সাফল্য

টি. এম. মামুন, বগুড়া
🕐 ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২০

শৌখিন দোকানের মালিক সাগর। বগুড়া শহরে নাম ডাক অবস্থান, সবই আছে তার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। এরই মধ্যে ২০১৯ সালে বিবাহিতা ক্রেতা সুমির সঙ্গে হয় পরিচয়। বাড়ে সখ্য। পরে প্রণয়ের সুর ধরে প্রেম ভালোবাসা গড়ায় বিয়ে অবধি। তবে তিন মাসের মাথায় শেষও হয়ে যায় সব। তবে লিগ্যাল এইডের শরণাপন্ন হলে সহজে মীমাংসা হয়, বাঁচে যার সামাজিক সম্মান ও অবস্থান। শুধু সাগর ও সুমি নয়, বছরজুড়ে এমন অভিযোগ বা মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা একশো পেরিয়েছে। তবে আবেদনের সংখ্যা দেখলে এ সংস্থার জনবল ঘাটতি কতটা, তা বোঝাই যায়। বিচারক থেকে শুরু করে অন্যদের জন্য নেই যানবাহন সুবিধাও। জনবল ও যানবাহন সংকট কাটিয়ে ওঠা গেলে আরও সুবিধার আওতায় আসতে পারত ভুক্তভোগীরা, বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

লিগ্যাল এইড অফিস সূত্রে জানা যায়, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে ‘আইন সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ মোতাবেক আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়। বগুড়া লিগ্যাল এইড অফিসে আইনজীবী রয়েছেন ৭১ জন।

তথ্য বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আইনি সহায়তা পেতে আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ২৪৫টি। এ তিন বছরে ৩৯৮ বাদী সরাসরি আবেদন করেছেন। বিভিন্ন আদালতে চলমান মামলার আপস-মীমাংসার জন্য লিগ্যাল এইডে পাঠানো হয়েছে ৪৩৩টি এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে সফলতা এসেছে ৩৮২টিতে। এছাড়া এডিআরের মাধ্যমে প্রি-কেস ও পোস্ট-কেস মিলিয়ে নগদ আদায় করা হয়েছে এক কোটি ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮২৮ টাকা।

আইনজীবীরা জানান, মূলত গরিব, দুঃখী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের আইনজীবী নিয়োগ, আপসযোগ্য ফৌজদারি ও দেওয়ানি বিষয়ক পারিবারিক আপস-মীমাংসা এবং ভুক্তভোগী যে কোনো নাগরিককে তালিকাভুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে সরাসরি আইনি পরামর্শ দিয়ে আসছে বগুড়া লিগ্যাল এইড। এ সংস্থার মাধ্যমে আইনি সুবিধা নিয়ে মীমাংসা করতে পারেন কারাবন্দিরাও।

লিগ্যাল এইডের আইনজীবী সারদী শবনম মিথুনের কাছে সংস্থার কার্যক্রম সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি খোলা কাগজকে বলেন, বিচারপ্রার্থী হয়ে অখুশি হয়েছেন এমন ব্যক্তি আমাদের বগুড়ায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানে কাউকে কোনো খাতে খরচ করতে হয় না, সময়ও নষ্ট করতে হয় না। কয়েকজন আইনজীবী জানান, জনবল বাড়ানো হলে এবং যানবাহন সংকট কাটলে আরও বেশি সংখ্যক বিচারপ্রার্থীকে সুবিধা দেওয়া যেত। কিন্তু মর্মান্তিক বিষয় হলো- আমাদের সংস্থায় বিচারকেরও যানবাহন সুবিধা দেওয়া হয়নি। অথচ আবেদন পেয়ে আমাদের অনেক সময় মাঠে ময়দানে ঘটনার সত্যতা ও বিবাদীর সঙ্গে যোগাযোগে যেতে হয়।

আদালতে মামলার জট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা আরও বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে, তাদেরও সচেতন হতে হবে। যারা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সুবিধা পেয়েছেন, তারা এ কাজে বেশি এগিয়ে আসতে পারেন। আসাটা উচিত এবং দরকারও। তাহলে সব বিষয়ে আদালতে ভিড় না করে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমেই তারা তাদের সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। তাহলেই আদালতে মামলার জট অনেক কমে আসবে।’

 
Electronic Paper