ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জেমি আটকের খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস সিরাজগঞ্জে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

কখনো আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের বন্ধু আবার কখনো বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের মানুষ পরিচয় দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করা এবং দেশের স্বনামধণ্য মানুষদের সাথে ছবি তুলে তা ফেসবুকে আপলোড করে নিজেকে তাদের কাছের মানুষ বলে জিম্মি করতো প্রতারক জেমি। তার আটকের খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সিরাজগঞ্জের ভুক্তভোগীরা।

আটক জেমি পারভীন শাহজাদপুর উপজেলার তালগাছি এলাকার মাকড়কোলা বাজারঘাটি গ্রামের সন্দেশ বিক্রেতা মোকসেদ প্রামানিকের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলায় তালগাছি স্কুলে বাবার সাথে সন্দেশ বিক্রি করতো নবিয়া। কখনো কখনো গানও করতেন। শাহজাদপুরের তালগাছি এলাকায় এখনো জেমি পারভিন সন্দেশ ওয়ালার মেয়ে নবিয়া নামেই পরিচিত। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথেই নবিয়া হয়ে যায় জেমি পারভিন। আর এর মাঝে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন অন্তত ৪ বার। সবশেষে জেমি আস্তানা গাড়েন ঢাকায়। গান নিয়ে হাজির হন বিভিন্ন বড় বড় অনুষ্ঠানে। নিজের চাতুড়তায় সখ্যতা বাড়ান রাজনীতির সাথে জড়িত বড় বড় নেতাদের সাথেও। তাদের সাথে ছবি তুলে ফেসুবকে আপলোড দিয়ে নিজেই নিজেকে প্রচার করেন আওয়ামী লীগের নারী নেত্রী হিসেবে। নিজেকে অনেক শক্তিশালী ভেবে নিজের ফেসবুক ওয়ালে প্রচার করেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নামে নানা কটুক্তি।

গত (৬ সেপ্টেম্বর) রোববার ঢাকার তেজগাঁও থানার একটি মামলায় সাইবার এ্যান্ড স্পেশাল বিভাগ তাকে গ্রেফতারের পরই তার নিজ এলাকার ভূক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করে।

ভুক্তভোগী গাড়াদহ সরকারী প্রাথামিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আয়নুল হক, বাবুল আক্তার, রতন মিয়া, মানিক চাঁদ ও এ্যাড. বদিউল আলমসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, জেমির কথামতো না চললে স্থানীয় সাধারণ মানুষকে পড়তে হতো নানা ধরনের মামলায়। মিথ্যা ধর্ষণ মামলাসহ হত্যা চেষ্টা ও অপহরণের মামলা হতো সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। আর পরবর্তিতে মামলা নিষ্পত্তির নামে অভিযুক্তদের কাছ থেকে নিতেন বিপুল পরিমান টাকা। সেই টাকাতেই ঢাকাসহ উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুরে গড়ে তুলেছেন অন্তত ৪টি বাড়ি। স্বরাষ্টমন্ত্রীর সাথে তোলা ছবি দেখিয়ে থানার কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করতেন। জেমি আটকের খবরে শাহজাদপুর-উল্লাপাড়ার ভুক্তভোগীরা স্বস্তির নি:স্বাস ফেলেছে।

ভুক্তভোগীরা আরোও জানান, টাকা চাই না এই প্রতারকের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেয়েছি। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

জেমির মা সোনাভান খাতুন জানান, আমার মেয়ে কোন অপরাধ করেনি।

নিরাপরাধ দাবি করে বলেন, আমার মেয়ের ঢাকায় কোনো বাড়ি নেই।

গাড়দহ ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে এর আগে জেমিকে নিয়ে বেশ কয়েকটি সালিশ বৈঠক হয়েছে। তবে জেমির অধিকাংশ অভিযোগই মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

থানায় দায়ের করা মামলাগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেও তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসিবুল আলম জানান, জেমি পারভিনের বিগত সময়ের রেকর্ড যাচাই বাছাই চলছে। তবে তার বিরুদ্ধে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 
Electronic Paper