ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজশাহীতে পাটের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে সংশয়

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী
🕐 ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২০

সরকারের পাটকলগুলো বন্ধ। এরই মধ্যে উঠছে পাট। পাট বিক্রি নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হতে পারে এমন দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে। তার ওপরে রাজশাহীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। অধিদফতর জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানায়, রাজশাহী জেলায় এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ২৬ হেক্টর বেড়ে চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। আর গত বছর ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছিল।

তিনি জানান, পাটের চাষ প্রতিবছরই বাড়ছে। রাজশাহী জেলায় গত বছরের তুলনায় ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকেছে কৃষক বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

জানা গেছে, গেল কয়েক বছর পাটের ফলন ও দাম ভালো ছিল। তাই লাভের মুখ দেখতে এবছর আবাদের পরিমাণও বাড়িয়েছিল কৃষক। আশানুরূপ বৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে পাট কাটা, জাগ দেওয়ায় কোন সমস্যা নেই। তবে এখনও বাজারে কৃষকের পাট আসতে শুরু করেনি। এরই মধ্যে দাম নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা।

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা হাটের পাইকারি ক্রেতা মঈন উদ্দিন জানান, পাট এখনো বাজারে উঠতে শুরু করেনি। দাম কেমন হবে পাট উঠলেই বোঝা যাবে। সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ, তবে পাটের দাম বলা যাচ্ছে না কেমন হবে। যদি বেসরকারি পাটকলগুলো সিন্ডিটেক করে পাটের দাম কমায়, তাহলে বেকায়দায় পড়ে যাবে কৃষকরা। এদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।

পবার দুয়ারির কৃষক আফরোজ জানান, এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে হাল চাষ, সার, বীজ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। কমপক্ষে ৩ বার জমিতে নিড়ানি দিতে ১৫ জন মজুরকে দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। পাট কাটতে আরও ২ হাজার টাকা ও ধুতে লাগছে ২ হাজার টাকা। তারপরে এবার সরকারের পাটকলগুলো বন্ধ। পাট কিনবে কারা ?

এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে একজন কৃষকের ব্যয় হয় ৯ হতে ১০ হাজার টাকা। অথচ একবিঘা জমিতে বড়জোর পাট পাওয়া যায় ৮ মণ। এবার কত টাকা দরে বিক্রি হবে পাট এমন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

অন্যদিকে, দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় চাষিদের পাট নিয়ে এবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। বৃষ্টির কারণে কাটা ও জাগ দেওয়ারও সমস্যা নেই। তবে এভাবে বৃষ্টি হলে পাট শুকানো নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে কৃষককে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) শামসুল হক আরও জানান, পাটের দাম ভালো থাকায়, কয়েক বছর থেকে পাটের আবাদ বেড়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সরকারি পাটকল বন্ধ। তবুও পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। কারণ বেসরকারি পাট কলগুলো রয়েছে। এছাড়া বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদা। কৃষকদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও জানান তিনি।

 

 
Electronic Paper