ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজশাহীতে আমে পচন বিপাকে চাষি-ব্যবসায়ীরা

মাসুদ রানা রাব্বানি, রাজশাহী
🕐 ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৮, ২০২০

দেশজুড়ে রাজশাহীর আমের কদর থাকলেও চলতি বছর প্রতিকূল আবহাওয়ায় উৎপাদিত আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর আমের গুণগত মান হারিয়েছে। গাছ থেকে নামানোর পরই শুরু হচ্ছে পচন। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত রাজশাহীর আমবাগান মালিকরা। এদিকে পরিবর্তিত আবহাওয়ায় নতুন জাত উদ্ভাবন আর পচন রোধে হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ও ফল গবেষকরা।

বাগান মালিকরা বলছেন, দেরিতে গ্রীষ্ম আসায় মুকুল ধরেছিল দুই সপ্তাহ পর। সে কারণে অতি ঝড় ও বৃষ্টির মুখে পড়ে মুকুল, গুটি আম। মৌসুম জুড়ে বাতাসে ৭১ থেকে ৮৬ শতাংশ আর্দ্রতা থাকায় ব্যাহত হয়েছে পুষ্ট হওয়ার প্রক্রিয়াও। শত চেষ্টাতেও ঠেকানো যায়নি পোকার আক্রমণ আর আমের ত্বকের কালচে দাগ। এতে করে স্বাদ আর মিষ্টিত্ব হারিয়েছে জনপ্রিয় জাতের আমগুলো।

কাজলার আমবাগান মালিক মিন্টু বলেন, গাছের পাতাতে যে ময়লা থাকে। ওই ময়লায় পানি লেগে আমে নামে। এজন্য আমের গায়ে ময়লা আবরণ পড়ে। আর এই আবরণের কারণে সেখানে অনেক ধরনের ছত্রাক জমে যায়। আরেক বাগান মালিক বলেন, আবহাওয়ার কারণে আমের কালার নষ্ট, পোকা ধরা, ঝরে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়ার তারতম্যে ক্ষতিগ্রস্ত আম নামানোর অল্পদিনেই পচন ধরে যাচ্ছে। ফলে আম বিক্রি করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এক আম বিক্রেতা বলেন, আমাদের পরিচিত ক্রেতারা বলছে যে, তোমাদের আম ভালো না, আমরা টাকা দিতে পারব না। আরেক বিক্রেতা বলেন, এবার আম পচে যাচ্ছে বলে বেশিভাগ রিপোর্ট আসছে।

এদিকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে এমন জাত সম্প্রসারণে নজর দিতে হবে গবেষকদের। আর আম পচন রোধে হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ব্যবহারের পরামর্শ ফল গবেষকের।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ড. এম মনজুর হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মনিটরিং করতে হবে। এবং এর সঙ্গে খাপ খাওয়া জাতের দিকে নজর রাখতে হবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দীন বলেন, ৫৫ ডিগ্রি সেন্টিমিটার তাপমাত্রায় যদি ৫ মিনিট আম ভিজিয়ে রাখা হয় তাহলে আমের পচন রোধ করা সম্ভব হবে।

জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিগত বছরগুলোতে বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠে রাজশাহীর তাপমাত্রা উঠেছে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত। চলতি বছর একই সময় এর গড় ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি গেল চার মাসে ৪২দিনে বৃষ্টি হয়েছে ৪৫৬ মিলিমিটার।

 
Electronic Paper