বগুড়ায় চাল আত্মসাৎ
তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি পৃথক তিন কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া
🕐 ১:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ০৪, ২০২০
বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় সরকারি চাল আত্মসাতে দুদকের করা মামলায় উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, গুদামের নৈশপ্রহরী সাদেকুল ইসলাম ও ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও ঘটনা তদন্তে গঠিত পৃথক তিনটি কমিটি এখনো জমা দিতে পারেনি তদন্ত প্রতিবেদন।
গতকাল বুধবার বেলা ১টা পর্যন্ত বিষয়গুলো স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনসহ খাদ্য বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তারা।
গাবতলী থানা পুলিশ, খাদ্য বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ২৯ মে রাতে গাবতলী উপজেলার সাবেকপাড়া সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ১৫ মেট্রিক টন চাল আত্মসাৎমূলক পাচারের সময় ট্রাকসহ উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা গাজী মো. শফিকুল ইসলামকে আটক করে গাবতলী মডেল থানা পুলিশ। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত নৈশপ্রহরী সাদেকুল ইসলাম ও চাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন ওরফে গম আমজাদকেও আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় গাবতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুন অর রশিদ আটকদের বিরুদ্ধে গাবতলী মডেল থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। পুলিশ এজাহারটি নথিভুক্ত না করে মামলা অধিকতর ফলপ্রসূ হওয়ার স্বার্থে আসামিদের দুদকে হস্তান্তর করে।
পরে এ ঘটনায় দুদক বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ বাদী হয়ে আটক তিনজনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৯৪ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ৩০ মে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের সরকারি ১৫ মেট্রিক টন চাল আত্মসাৎ দেখানো হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। সহকারী পরিচালক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ জানিয়েছেন, থানা পুলিশের কাছ থেকে আসামি বুঝে নেওয়ার পর প্রাথমিক অনুসন্ধানে চাল আত্মসাতের বিষয়টি সত্য বলে প্রতীয়মান হওয়ায় আটক তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এস এম সাইফুল ইসলাম প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, খাদ্যগুদাম থেকে চাল আত্মসাৎ বিষয়ে পৃথক ৩টি ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে গাবতলীর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক করে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি, জেলা খাদ্য বিভাগের পক্ষে গাবতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে আহ্বায়ক করে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (কারিগরি, বগুড়া) সদস্য করে দ্বিতীয়টি এবং রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে আহ্বায়ক করে সহকারী রসায়নবিদ (রাজশাহী) ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরি) বগুড়াকে সদস্য করে ৩টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিগুলোকে মামলা পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে।
বগুড়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল হক মামুন জানান, খাদ্য বিভাগ এমন অন্যায়কে নিশ্চয় সমর্থন করে না। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলেই অবশ্যই গ্রেফতার খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।