করোনায় আম বাজারজাত, আসছে ডিজিটাল মার্কেটিং
আব্দুর রব নাহিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
🕐 ১:৫৮ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২০
আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। কিছুদিন পরই শুরু হচ্ছে আমের মৌসুম। সারা বছর জুড়েই মৌসুমের প্রতিক্ষায় থাকেন এখানকার বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। তবে এবার একটু ভিন্ন পরিস্থিতিতেই শুরু হতে যাচ্ছে আমের মৌসুম। বাগান থেকে শ্রমিক দিয়ে আম সংগ্রহের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে এবার সে ঝুঁকি এড়াতে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষিরা।
শিবগঞ্জের আম ব্যবসায়ী শামীম খান বলেন, ‘আমের উৎপাদন কিছুটা কম হবে এবার। তারপরও আমরা আশাবাদী সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারলে খুব বেশি সমস্যা হবে না। এ বছর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। সারা দেশে ভোক্তার কাছে আমরা সরাসরি আম পৌঁছানোর একটা সার্কেল তৈরির চেষ্টা করছি। এ কাজে আমরা নতুন অনেক উদ্যোক্তাদের একসঙ্গে করতে পেরেছি। ইতোমধ্যেই আমরা স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। করোনাকালেও আম নিয়ে খুব বেশি সমস্যা হবে না।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীন জানান, এ বছর ৭০-৭৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। এরপর মার্চের মাঝামাঝিতে কয়েকদিনের মেঘলা আবহাওয়ার কারণে মুকুল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর টানা অনেকদিন বৃষ্টিপাত ছিল না, তবে মে মাসে বেশ কয়েকবার বৃষ্টি হয়েছে। যা আমের দ্রুত বৃদ্ধি ও পরিপক্ক হতে সহায়ক হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক জানান, আমের দ্রুত বৃদ্ধি বা দ্রুত পাকানোর জন্য হরমোন বা রাসায়নিকের ব্যবহার করা যাবে না। আম সংগ্রহের ১৫ দিন আগে কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না। বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করবে জেলা প্রশাসন। আম পরিপক্ক হলেই তা বাজারজাত করা যাবে। এ সময়ে আমের পরিবহন ও বাজারজাত করতে ব্যবসায়ীরা যাতে কোন ধরনের সমস্যায় না পড়েন, সে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিরাপদ আম উৎপাদন, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাগান মালিক, আম ব্যবসায়ী, ফল গবেষক ও কৃষি বিভাগের সংস্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ১৪টি সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে করোনাকালে আম মৌসুম শুরু হওয়ায় ঝুঁকি এড়াতে, আম শ্রমিক ও আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা ও তাদের করোনা পরীক্ষা করা।
এছাড়া আম পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলের ব্যবহার করা যায় কিনা, সে বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া। এছাড়াও বেসরকারিভাবে সড়কপথে বিশেষ কার্ভডভ্যান চালানোর বিষয়ে চেষ্টা করা। সড়কপথে যাওয়া আমের ট্রাক যাতে কোনো সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট গাড়িতে প্রত্যায়ন দেওয়া।