সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়ম
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
🕐 ৩:৪১ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২০
রাজশাহীর বাঘায় প্রৌকশলী অধিদফতর, দুটি পৌর সভা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদফতর থেকে চলছে উন্নয়ন মূলক কাজ। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে রাস্তা, ড্রেন, স্কুল নির্মাণ ও কালভাট স্থাপন। তবে আনুপাতিক হারে ৯০ ভাগ কাজ চলছে সাবলিজ নেওয়ার মাধ্যমে। এ সব কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
তথ্য মতে, চলতি অর্থ বছরে জেলার বাঘা উপজেলার দুটি পৌর সভা, উপজেলা প্রকৌশলী অধিদফতর এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনস্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে চলছে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ। এ সকল উন্নয়ন কাজের মধ্যে অত্যান্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ইতোমধ্যে বাঘা পৌর সভায় দুইটি এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে একটি চলমান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরও নিষেধ উপেক্ষ করে দুটি কাজ সম্পন্ন করেছেন ঠিকাদার। লোকজনের অভিযোগ, সাবলিজ নিয়ে কাজ করাই সকল কাজেই ব্যবপক অনিয়ম হচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব কাজ করছেন এলাকার ঠিকাদারা।
সরেজমিন গত সোমবার উপজেলার মীরগঞ্জ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার ইমদাদ মাস্টারের বাড়ি থেকে মীরগঞ্জ স্কুল পর্যন্ত ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ের ৪শ মিটার একটি রাস্তার কাজ চলছে নিম্নমানের ইট, পচা ইটের খোয়া ও নিম্নমানের বালু দিয়ে। আর এ কাজ দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। তবে ঠিকাদারের দাবি সরকারি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এটি খারাপ না ভালো সেটি দেখার কিছু নেই। আর উপজেলা প্রকৌশলীর ভাষ্য রাস্তা না দেখে কিছুই বলা যাবে না।
ওই গ্রামের মিজানুর রহমান, তাজুল ও ফজলুসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, এ রাস্তাটিতে প্রথম থেকেই অনিয়ম করা হয়েছে। বহুদিন পুর্বে নির্মাণ করা রাস্তার ইট তুলে সেই ইটের খোয়া তৈরী করে তার উপরে রোলার দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ওই কাজের স্বত্বাধিকারী (বি.এস) এন্টারপ্রাইজের স্থানীয় ঠিকাদার আবুল বাশার বলেন, রাস্তাটিতে কোন ধরনের অনিয়ম করা হয়নি। সরকারি নিয়ম মেনেই রাস্তাটির কাজ করা হচ্ছে। পচা ইট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এখানে ইট ভালো না পচা তা দেখার বিষয় আমার নয়।
বাঘা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থে বছরে উপজেলায় ৬টি রাস্তা ও ২টি কালভাট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে চলেছে। যার প্রাক্কলন ব্যয় প্রায় ৩ কোটি টাকা। সরেজমিন এ সকল উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যাই সকল কাজে ব্যাপক অনিয়ম। যার সবগুলোই চলছে সবলিজের (ক্রয়-বিক্রয়) মাধ্যমে।
অপরদিকে উপজেলার দুু’টি পৌরসভা বাঘা-আড়ানী এলাকায় যে সকল উন্নয়ন কাজ চলছে তার ৯০ ভাগ চলছে সাবলিজের মাধ্যমে। একই অবস্থা উপজেলা প্রকৌশলীর অধিদপ্তরে। বিশেষ করে চলমান ৭ টি স্কুল নির্মান এবং ৯০ ভাগ রাস্তার সব গুলোই করছেন সাব-লিজ নেয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে অনিয়মের শেষ নেই এসব কাজে।
বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার বলেন, মীরগঞ্জের রাস্তাটি এখনও দেখার সুযোগ হয়নি। তবে রাস্তায় পচা ইট দিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই। এছাড়া রাস্তায় সেলভেস্ট ইট ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না।
উপজেলা সহকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হেকমত আলী ও বাঘা পৌর সভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা উন্নয়ন কাজ করছেন তারা স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তি এবং এলাকার প্রভাবশালী। এ কারণে ইচ্ছে থাকার পরও অনেক সময় আইনি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না।