জয়নালের মৃতদেহের আশা ছেড়ে দিয়েছেন স্ত্রী সন্তানরা
হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও
🕐 ৩:১৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৭, ২০২০
ভারতীয় রেশন ও আধার কার্ড সঙ্গে থাকায় ঠাকুরগাঁও সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত জয়নালের লাশ গ্রহণ করেনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চোষপাড়া সীমান্তের এস ৩৭৯/১ এস নম্বর মেইন পিলার এলাকায় জয়নাল আবেদিন (৩৫) নামে এক বাংলাদেশী নাগরিককে গুলি করে হত্যার পর তার লাশ ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে মরদেহ ফেরত নিতে বিজিবিকে চিঠি দেয় বিএসএফ। কিন্তু বিজিবি তাতে সাড়া দেয়নি এবং গ্রহণ করেনি জয়নালের লাশ।
একদিকে ভারতীয় নাগরিক দাবি করে লাশ গ্রহণ করেনি বিজিবি, অপরদিকে লাশ দাবি করেছে নিহতের ভারতীয় স্ত্রী। তাই জয়নালের লাশ ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন তার এ দেশীয় স্ত্রী ও তিন সন্তান।
জানা যায়, নিহত জয়নাল অবেদিন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দীনের ছেলে। সাত ভাই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। কয়েক বছর আগে কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়ে পশ্চিম দিনাজপুর জেলার পানজিপাড়া গ্রামে আশ্রয় নেন।
সেখানে ভারতীয় এক নারীকে বিয়ে করেন। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও জেলার রানিশংকৈল উপজেলায় আঞ্জু বেগম নামের একজন স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে তার। দু দেশেই স্ত্রী সন্তান থাকায় জয়নাল প্রায় সময়েই যাতায়াত করতেন সীমান্তের দুই পাড়ে।
গত বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) ভোরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চোষপাড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে স্ত্রী সন্তানের কাছে যাচ্ছিলেন জয়নাল। এ সময় বিএসএফ’র ১৭১ চাকলাগড় ক্যাম্পের টহলরত জওয়ানরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
জয়নালের স্ত্রী আঞ্জু বেগম বলেন, আমরা চেয়েছিলাম তার লাশটা যেনো আমরা পাই। তাকে শেষ দেখা হলো না আমাদের। পরে শুনতে পেরেছি আমার স্বামীর ভারতীয় স্ত্রী তার লাশ দাবি করেছে। তাই আমার স্বামীর লাশটা পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমার সন্তানেরা তাদের বাবাকে শেষ দেখা দেখতে পেলোনা- এটাই আফসোস।
এ ব্যপারে ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শহীদুল ইসলাম জানান, সীমান্তে নিহত ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ দেশে থাকেন না। তাকে হত্যার পর লাশ বিএসএফ সদস্যরা ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। তার দেহ তল্লাশি করে ভারতের রেশন ও আধার কার্ড পায় তারা। তথাপি বিএসএফ তার লাশ ফেরত দিতে চাইলে আমরা তা গ্রহণ করিনি। যেহেতু তিনি (জয়নাল) কাগজপত্রে ভারতের নাগরিক তাই আমরা তার মরদেহ গ্রহণ করতে পারি না।