রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বন্ধ ক্যাম্পাসে পশুপাখির জন্য ভালোবাসা
আলী ইউনুস হৃদয়, রাবি
🕐 ১০:২০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০৪, ২০২০
করোনা সংক্রমণ রোধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রিয় ক্যাম্পাসে এখন সুনশান নিরবতা। আর বসন্তে পাতা ঝরা গাছগুলোতে এখন কচি সবুজ পাতা দোল খাচ্ছে সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বিচরণ রয়েছে। পুরো ক্যাম্পাস যেন এখন পশুপাখিদের অভয়আশ্রমে পরিণত হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও আশেপাশের খাবারের দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে কুকুর ও পাখিগুলো। আর এ পশুপাখিদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনের সামনে প্রতিদিন পশুপাখিদের জন্য রান্না করা হচ্ছে। ইট দিয়ে তৈরি বড় চুলার পাশে বসে খাবারের জন্য কুকুরদের অপেক্ষা রয়েছে। রান্না শেষে কয়েকটি পাত্রে খাবারগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের যেসব স্থানে কুকুররা থাকে সেসব স্থানে খাবার সরবরাহ করছেন। ক্যাম্পাসের প্রায় শতাধিক কুকুরকে প্রতিদিন দুইবার খাবার দেওয়া হয়।
এছাড়া পাখিদেরও রান্না খাবার দেওয়া হচ্ছে। আর এ দুই শিক্ষার্থী পশুপাখিদের জন্য এ প্রচেষ্টার নাম দিয়েছেন ‘পোষাপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প।’
তাদেরই একজন প্রসেনজিৎ কুমার বলেন, ‘কুকুরগুলোর পাশাপাশি পাখিদের খাওয়ানোর চেষ্টা করছি। এছাড়া ক্যাম্পাসের হল ও একাডেমিক ভবনগুলোতে বেশকিছু বিড়াল রয়েছে। তাদেরকেও খাওয়ানোর ইচ্ছা আছে। প্রতিদিন আইবিএ ভবন থেকে কাজলা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় কুকুর ও পাখিদের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে অর্থ সংকট ও স্বেচ্ছাসেবীর জন্য সব পশুপাখিকে খাবার দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। যেকেউ আর্থিক সহযোগিতা করতে পারেন একই সঙ্গে কেউ আগ্রহী হলে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।’
আরেকজন মাহমুদ সাকী বললেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে ঘুরতে যেয়ে অসহায় কুকুরগুলোকে দেখে প্রথমে খারাপ লাগে। এরপর প্রজেনজিৎ দাদা ও ফোকলোর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক স্যারের সঙ্গে আলোচনা করি। একমত হলাম যে, আমরা নিজেরাই সাধ্যমতো জায়গা থেকে একবেলা খাবার দিতে পারি। সেদিনই রাকসু ভবনের সামনে চাল-ডাল রান্না করে কুকুরদের খাওয়ানো হয়। দিনে দিনে অনেকেই আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বিশেষ করে কয়েকজন শিক্ষক ও প্রক্টর স্যার এগিয়ে এসেছেন। সাবেক শিক্ষার্থীরাও সাধ্যমতো সহযোগিতা করছেন। এখন দুইবেলা কুকুর ও পাখিদের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। একদিনে ১২ কেজি চাউল ও তিন কেজি ডালের প্রয়োজন হচ্ছে খাওয়াতে যা প্রায় পাঁচশ টাকার মতো। যে কেউ আমাদেরকে সহযোগিতা করতে পারবেন বিকাশ নম্বর- ০১৭৪০-৩৬৯৫৯৫ আর প্রয়োজনে যোগাযোগ নম্বর- ০১৭৪৮-২৭১২৫০।