ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আত্রাই নদ বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
🕐 ১:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৩, ২০২০

মাছের প্রজনন বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা আত্রাই নদ খনন করা হয়েছিল। সেটা এক বছর আগে। খননের একারণে ওই নদে পানি থাকায় মিলছে ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছ। এসব মাছ ধরতে ওই নদে বাঁধ দিয়ে পানি সেচে মাছ ধরছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। শ্যালোমেশিন দিয়ে নদী শুকিয়ে মাছ ধরার কারণে নদীতে বিচরণ করা ছোটবড় ও মা মাছ ধরা পড়ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি। নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। গেল পাঁচদিন ধরে অবৈধভাবে মাছ শিকারের মহোৎসব চললেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর এলাকায় চলছে মাছ ধরার এ কর্মযজ্ঞ।

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, ১৯৫০দি প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস এ্যাক্ট-১৯৫০; সাধারণভাবে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে বলা আছে নদী-নালা, খাল ও বিলে সংযোগ আছে এরুপ জলাশয়ে প্রতি বছর ১এপ্রিল থেকে ৩১ আগষ্ট ( চৈত্র মাসের মাঝামাঝি হতে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি ) পর্যন্ত শোল, গজার, টাকিসহ অন্যান্য মাছের পোনা ঝাঁক বা দম্পতি ( মা মাছ ) মাছ ধরা ও ধ্বংস করা আইনে নিষিদ্ধ রয়েছে। আইন ভঙ্গের জন্য কমপক্ষে মাস থেকে এক বছরের সশ্রম কারাদ-সহ দুই হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, নদে বাঁধ দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভাজন করা হয়েছে। সেখানে পাঁচটি শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি সেচে শুকিয়ে ফেলা হচ্ছে আত্রাই নদ। মুকুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি পানি সেচের কাজে জড়িত রয়েছেন। পানি সেচের ছবি তুলতে সাংবাদিকদের নিষেধও করেন তিনি।

মুকুল হোসেন জানান, যোগেন্দ্রনগর গ্রামের রবিউল করিম (রবি) ও মনির হোসেন (মনি) নামে দুই ব্যক্তি নদীর পানি শুকিয়ে মাছ ধরছেন। শ্যালো ইঞ্জিনগুলো ভাড়ায় খাটাচ্ছেন তিনি (মুকুল হোসেন)।

স্থানীয়রা জানান, নদটি খননের পর নদীতে ৫-৬ ফুট পানি রয়েছে। সেখানে নানা প্রজাতির দেশিয় মাছ রয়েছে। গ্রামের মানুষ ও জেলেরা সেখান থেকে মাছ ধরে আমিষের চাহিদা পূরণসহ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু নদী শুকিয়ে মাছ শিকার করায় মাছের অভায়শ্রমসহ প্রজনন নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য। মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছে না।

মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িতদের একজন রবিউল করিম দাবি করেন, এলাকার কবরস্থান ও মসজিদের উন্নয়নে অনুদান দিয়ে নদী সেচে মাছ শিকার করছেন তারা। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করা হয়েছে। পত্রিকায় লিখে লাভ হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইউএনও তমাল হোসেন জানান, দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

জেলা প্রশাসক শাহরিয়াজ জানান, নদী শুকিয়ে মাছ শিকার ও জীববৈচিত্র্য নষ্টকরা আইন সংগত নয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দিবেন বলে জানান তিনি।

 
Electronic Paper