ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে ছাত্রী ধর্ষণ, শিক্ষক বরখাস্ত

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
🕐 ২:৫৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২০

নওগাঁর মান্দায় জ্ঞান বুদ্ধি বাড়ার প্রলোভন দেখিয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে একাধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক রেজাউল হককে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত শুক্রবার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। তবে এ কাজে তাকে সহযোগীতা করেন সুইট নামে আরেক সহকারি শিক্ষক।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত বুধবার স্কুল ছুটির দিন বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে সাজেশন দেওয়ার কথা বলে বিদ্যালয়ে ডেকে নেয়। এরপর ওই শিক্ষক ছাত্রীটিকে মেধা এবং জ্ঞান বৃদ্ধির কথা বলে কৌশলে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও ঘুমের ঔষুধ খাওয়ায়। পরে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে কাজ করা কিছু শ্রমিকরা তাদের টিনের একটি শ্রেণি কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর বিষয়টি জানতে পারে স্থানীয়রা। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীদের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় ঘটনার একদিন পর গত শুক্রবার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল হককে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই শিক্ষক গত শুক্রবার থেকে পলাতক রয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক আব্দুল মতিন বলেন, গত বুধবার শিক্ষক রেজাউল প্রথমে ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে একটি আমের গাছের নিচে কিছুক্ষণ গল্প করেন। এরপর টিন শেটের একটি খোলা শ্রেণি কক্ষের মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর আমার সন্দেহ হলে কক্ষের খোলা জানালা দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখতে পাই। এছাড়াও আরও দুইজন শিক্ষক রেজাউলের সঙ্গে বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তারা রেজাউলকে পাহারা দিচ্ছিলেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে স্থানীয়রা এসে শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে আর শিক্ষক পালিয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, শিক্ষক রেজাউল হক এরকম কাজ বারবার করে আসছে। এর আগে এক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

ওই ছাত্রীর বাবা এমদাদুল হক বলেন, আমার মেয়েসহ তার কাছে প্রাইভেট পড়া অনেক শিক্ষার্থীকে দীর্ঘদিন ধরে সিংগী হাটের এসএম খয়ের আলী নামে স্থানীয় এক ঔষুধের দোকানদার এবং কাছ থেকে ঘুমের ট্যাবলেট সংগ্রহ করে খাইয়ে আসছে ওই শিক্ষক। কিন্তু বিষয়টি সম্প্রতি এই ঘটনার পর জানতে পেরেছি। আমি ওই লম্পট শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রয়ের কথা অস্বীকার করেন সিংগীহাট পোষ্ট অফিসের ঔষুধের দোকানদার ও ডাক্তার এসএম খয়ের আলী।

অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, ওইদিন শিক্ষার্থী আমার কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে। কিন্তু তার সঙ্গে আমার কিছুই হয়নি। এটি সম্পন্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট।

প্রধান শিক্ষক মকসেদ আলী প্রামাণিক বলেন, আমি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই রেজাউল হককে ডেকে এবিষয়ে ব্যাখা চেয়েছিলাম। রেজাউল তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেছেন ভবিষ্যতে তিনি এমন কাজ আর করবেন না।

সভাপতি আল-মামনুর রশিদ ওরফে আলম বলেন, গত ২৫ তারিখের ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রধান শিক্ষককে জরুরি সভা কল করতে বলেছিলাম। এরপর ২৭ তারিখের ওই সভায় শিক্ষক রেজাউল হক তার অপরাধ স্বীকার করে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি দেন। গত শনিবার সভার পরবর্তী দিন ধার্য্য করা হয়েছে। তার বিষয়ে সেদিন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ লিখিত ভাবে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 
Electronic Paper