করোনা আতঙ্ক, রোগীশূন্য বড়াইগ্রাম হাসপাতাল
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
🕐 ৬:২১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২০
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুসহ অনেক রোগীর ভীড়ে জনাকীর্ণ থাকা এ হাসপাতাল বর্তমানে রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অবস্থাও একই রকম বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোতলায় মহিলা ওয়ার্ডে কোন রোগী ভর্তি নেই। বেডগুলো শূন্য পড়ে রয়েছে। নীচতলায় পুরুষ ওয়ার্ডেও কোন রোগী না থাকায় সেটি তালাবদ্ধ।
এর আগে গত বুধবার মহিলা ওয়ার্ডে মাত্র তিনজন রোগী থাকলেও পুরুষ ওয়ার্ডে কোন রোগী না থাকায় সেদিনও এ ওয়ার্ডটি তালাবদ্ধ ছিলো বলে জানান কর্তব্যরত নার্সরা। এ সময় হাসপাতালে রোগী না থাকায় চিকিৎসক-নার্সদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়।
বহির্বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৪৫০-৫০০ রোগী বহির্বিভাগে টিকেট কেটে চিকিৎসকের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র ও ঔষধ নেন। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে রোগী আসার পরিমাণ একেবারেই কমে গেছে।
টিকেট দেওয়ার দায়িত্বে থাকা শহীদুল ইসলাম জানান, আজ খুবই কম রোগী এসেছে। এর আগে গত বুধবার ৮৩ জন মহিলা, ৪৩ জন পুরুষ ও ১৬ জন শিশু মিলিয়ে মোট ১৪২ জন এবং বুধবার ৮৮ জন মহিলা, ৫২ জন পুরুষ ও ১২ জন শিশু মিলিয়ে মোট ১৫২ জন রোগী বহির্বিভাগে ব্যবস্থাপত্র নিয়েছে। তাছাড়া বাইরে নোটিস টাঙিয়ে দিয়ে স্বর্দি, জ¦র ও কাশির রোগীদের হাসপাতালে আসতে বারণ করা হয়েছে।
এদিকে, করোনা চিকিৎসায় হাসপাতালে পাঁচ বেডের আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের নিরাপত্তায় ১০টি পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) এবং কিছু মাস্ক ও গ্লাভস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। করোনা সতর্কতায় নানা পরামর্শ দেওয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট লাগানো হয়েছে।
মেডিকেল অফিসার ডা. শারমিন জাহান জানান, মানুষ করোনা আতঙ্কে হাসপাতালে কম আসছে। স্বর্দি-জ¦রের রোগীদের আসতে বারণ করে হাসপাতালের ইমার্জেন্সী নম্বরে বা মেডিকেল অফিসারদের নম্বরে কল দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র নিতে বলা হয়েছে। এ কারণেও রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। তবে অনেকেই মোবাইলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পরিতোষ রায় বলেন, আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসলেও মানুষ আতঙ্কে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। যেহেতু হাসপাতালে সব রকম রোগী আসে, তাই এখান থেকেও করোনা ছড়াতে পারে বলে তাদের ধারণা।
তবে তিনি করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এবং যে কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।