তিন যুগ পর বাড়ি ফেরায় স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাতে বাধা
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
🕐 ১২:৪৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
নওগাঁর সাপাহারে নিখোঁজ হওয়ার তিন যুগ পর বাড়ি ফিরে আসা এক ব্যক্তির পরিবারে আনন্দের বন্যা বইলেও গ্রাম্য ফতোয়ার কারণে তিন দিনেও স্বামী ও স্ত্রীর দেখা করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনা ঘটেছে উপজেলার দক্ষিণ আলাদীপুর গ্রামে।
পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত-বাঘ রাজ্জাকের ছেলে তখনকার দিনে টগবগে যুবক নুরুজ্জামান বর্তমান (৬০) ১৯৮২ সালে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তার বাবার ওপর অভিমান করে স্ত্রী ও সন্তান রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে হাল ছেড়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে পরিবারের লোকজনের ধারণা হয় যে, হয়ত সে ভারতে চলে গেছে অথবা মারা গেছে।
এই ধারণা নিয়ে নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফন বিবি সে সময় তার গর্ভের সন্তান ও নাবালক দুই ছেলেকে নিয়ে উপজেলার কৃষ্ণসদা গ্রামে তার বাবার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এখন পর্যন্ত কোন দ্বিতীয় বিয়ে না করেই সেখানে সন্তানদের নিয়ে বাবার সংসারে বসবাস করে আসে। ইতোমধ্যে তার সন্তানরা বিয়ে শাদি করে মাকে নিয়ে সংসার করতে থাকে। এমন অবস্থায় গত সোমবার দুপুরে হঠাৎ করে আগমন ঘটে নিরুদ্দেশ হওয়া নুরুজ্জামানের। সে তার বাবার বাড়ি দক্ষিণ আলাদিপুর গ্রামে আসে। দীর্ঘ ৩৮ বছর পর গ্রামে ফিরে আসায় নুরুজ্জামানকে নিয়ে গ্রামে বেশ হৈচৈ পড়ে যায়। সংবাদ পেয়ে নানার বাড়ী থেকে তার ছেলেরা ছুটে চলে আসে বাবাকে এক নজর দেখার জন্য। সেখানে বাবা-ছেলের মধ্যে ঘটে যায় এক মিলন মেলা। এই দৃশ্য দেখার জন্য শত শত মানুষ সেখানে ছুটে আসে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর ইচ্ছে থাকলেও গ্রাম্য মাতব্বরদের ফতোয়ার কারণে একে অপরের সঙ্গে এখনও সাক্ষাৎ কিংবা দেখা করতে পারেনি তারা। গ্রামের লোকজন বলছে কোন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ১২ বছর সম্পর্ক না থাকলে সে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে যায়। এখন তারা আর স্বামী-স্ত্রী নয়। এ কথার ওপর ভিত্তি করে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখা কিংবা কথা বলতে দেওয়া হয়নি।