বাঁশের সাঁকোই ভরসা
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)
🕐 ৪:১৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ক্ষিদ্র কালিকাপুর নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর উপর দিয়ে চলাচলের একমাত্র ভরসা ইজারাদারের নির্মিত বাঁশের সাঁকো। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে স্বাধীনতার ৪৮বছর পার হলেও নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর ওপর দিয়ে পারাপারের জন্য আত্রাই উপজেলার ক্ষিদ্র কালিকাপুর নামক স্থানে একটি ব্রিজের অভাবে বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই চলাচলের জন্য একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুষ্ক মৌসুমে যখন বিলের পানি কমতে থাকে তখন পানি-কাদায় একাকার অবস্থায় পায়ে হেঁটেই আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, ঝিয়াড়িগ্রাম, শলিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে চলাচল করে। নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় ঘোষগ্রাম-ক্ষিদ্র কালিকাপুর নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি বাঁশের সাঁকোর ওপরই ভরসা করতে হয় দুই ইউনিয়নবাসীর। যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোন পথ না থাকায় আত্রাই উপজেলার বিল বেষ্টিত কালিকাপুর ইউপির অবহেলিত জনপদের মধ্যে আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, ঝিয়াড়িগ্রাম, শলিয়া বড়কালিকাপুর গ্রামসহ রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, নান্দাইবাড়ি, আতাইকুলা বেতগাড়ী গ্রামের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক জরুরি সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
ওই গ্রামগুলোতে সবচেয়ে বেশি ইরি ধান উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যসামগ্রী সহজভাবে বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হয়। কিছুটা বাধ্য হয়ে ফরিয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কমদামে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে হয়। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ প্রাণের দাবি থাকলেও এই এলাকাবাসীর ভাগ্য উন্নয়নের কারো যেন মাথা ব্যাথা নাই। অথচ উক্ত স্থানে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে রানীনগর-আত্রাই উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি পূরণ হবে।
আত্রাই উপজেলার ক্ষিদ্র কালিকাপুর গ্রামের আকবর আলী সরদার, আব্দুর রউফ, রুহুল আমিন বিকাশ ও বেলাল হোসেনসহ অনেকেই জানান, এখানে ব্রিজ না থাকায় প্রায় সারা বছরই কষ্ট করে নদী পারাপার হতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়। চেয়ারম্যান নাজমুল হক নাদিম জানান, এ উপজেলার মানুষের পারাপারের জন্য বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে নৌকা এবং বাঁশের সাঁকোর ওপর ভরসা রাখতে হয় প্রায় আটটি গ্রামের বসবাসরত জনসাধারণের।