ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পাঠদান
চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
🕐 ১:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
স্কুলের ছাদের পলেস্তারা খসে কখন যেন মাথার ওপরে পরে, এই আতঙ্কে ক্লাসের ব্রেঞ্চে না বসে অধিকাংশ সময় দাড়িয়ে ক্লাস করি। যেকোন সময় দৌঁড়ে বের হতে হবে, এই ভয়ে বুক দড়ফড় করে। এ ভাঙা স্কুলে আর আসব না অভিমানের সুরে কথাগুলো এভাবেই বলছিল চৌহালী উপজেলার কে কে পশ্চিম জোতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিব, খাদিজা, সুজন ও কেয়ামনি।
সরেজমিন ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালে কে কে পশ্চিম জোতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ২৭৮ জন শিক্ষার্থীকে সাতজন শিক্ষক পাঠদান করছে। দুই যুগ আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক বিদ্যালয়ে একতলা বিশিষ্ট পাকা ভবনটি নির্মিত হয়। সে সময় ভবনটির কাজ নিম্নমানের হওয়ায় বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরিণত হয়েছে।
ভবনের বিভিন্ন অংশ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, বেড়িয়ে আসছে মরিচা পড়া রড। বিভিন্ন সময় পলেস্তরা খসে পড়ে আহত হয়েছে একাধিক শিক্ষার্থী। এজন্য শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনে আরেকটি টিনসেট ক্লাসের ঘর তৈরি করা হলেও এক বছর না যেতেই মেঝে ভেঙে ও দেবে গেছে। বাহিরের ওয়ালে ফাঁটল ধরেছে। যে কারণে সেখানেও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে কোনও উপায় না থাকায় এই ভবনের দুটি কক্ষে ঝুঁকি নিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও শিক্ষকরা অফিস করছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম আলম জানান, কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে মরিচা ধরা রড বেরিয়ে গেছে। এ কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বইয়ের দিকে মনোযোগী না হয়ে অধিকাংশ সময় ছাদের দিকে ভয়ার্তুদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময়ে ছাদের পলেস্তরা খসে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিষয়টি বারবার শিক্ষা অফিসে জানিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছে না।
সহকারী শিক্ষক আবদুর রউফ জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অত্যন্ত নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমরা পাঠদান করছি। তাছাড়া শ্রেণিকক্ষ সংকটে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় পাঠদানে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
চৌহালী উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান জানান, কে কে পশ্চিম জোতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে যমুনা নদী থাকায় আপাতত নতুন ভবনের সম্ভবনা নেই। তবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুরনো ভবনটি সংস্কারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
চৌহালীর ইউএনও দেওয়ান মওদুদ আহমেদ জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে ভবন সংস্কারে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।