ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুর্গাপুরে অবহেলিত গণকবর

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
🕐 ১:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯

১৯৭১ সালের ২২ অক্টোবর রাতে সে সময়ের পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগিতায় রাজাকার, আল-বদর, আল-শাম্স ও শান্তি কমিটির সদস্যরা দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদের ধরে এনে গগণবাড়িয়া গ্রামে বেঁধে রাখে। পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গগনবাড়িয়া গ্রামের একটি মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা ও জীবন্ত মানুষকে মাটি চাপা দেয়া হয় ১৮৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার সাধারণ মানুষকে।

মুহুর্তেই পুরো এলাকা রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। এ ঘটনার অনেক পরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এবং গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে বর্তমানে তা গরু ও ছাগলের বাসস্থানে পরিণত হয়েছে।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের অভিযোগ, সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না থাকার কারণে এভাবে শহীদ মিনার দখল করে গরু ও ছাগলের বাসস্থান বানানোসহ সবজি চাষ করা হচ্ছে। তাদের দাবি এভাবে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের অবমাননা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তারা ২০১১ সালের ৬ মার্চ গগনবাড়িয়া গ্রামে নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞ ও জীবন্ত মানুষ মাটি চাপা দেয়ার গণকবরটি পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত অধরা থেকে গেছে বিচার কার্যক্রম।

দাওকান্দি সরকারি কলেজের প্রভাষক আয়নাল হক, স্থানীয় মুক্তিয়োদ্ধাদের বর্ণনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গগনবাড়িয়া গ্রামের ১৮৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে গুলি করে এবং জীবন্ত মাটির নিচে চাপা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্ ও শান্তি কমিটির লোকজন। যুগিশো পালশা গ্রামে গিয়েও ৪২ জন হিন্দু ব্যক্তিকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে সময় যারা এসব নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজন এখনও বেঁচে আছে এবং ইতোমধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যদুনাথ সরকারের ভাতিজা ড. প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার জানান, স্বাধীনতার পরেও গগনবাড়িয়া গ্রামে গণহত্যার স্থানটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে উন্মুক্ত হযে পড়েছিল।

 
Electronic Paper