নভেম্বরেই পানিশূন্য তিস্তা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
🕐 ৪:৪০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৮, ২০১৯
নভেম্বরের শুরুতেই ধু ধু বালুচরে পরিণত হয় একসময়ের সর্বনাশী তিস্তা নদী। গত এক মাস আগেও সেখানে ছিল অথৈ পানি। এখন সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে। যেন এক মরা নদী। বিশাল বালুর স্তূপে মূল গতিপথ হারাতে বসেছে। নদীতে পানি না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তিস্তা পাড়ের জেলেরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তা ব্যারাজের ৫২টি গেটের মধ্যে ৪৫টি বন্ধ করে উজানে পানি আটকানোর চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এতে যেটুকু পানি উজানে জমছে তাতেই ব্যারাজটির বাকি সাতটি গেটের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। কিন্তু চলতি সপ্তাহে পানিপ্রবাহ মাত্র এক থেকে দেড় হাজার কিউসেকে ওঠানামা করায় সেচের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় একদিকে যেমন বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে প্রতি বছর উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে, তেমনি শুষ্ক মৌসুমে ব্যারাজের ভাটিতে ভারত গোজল ডোবা নামক স্থানে বাঁধের সাহায্যে একতরফা পানি আটকে বাংলাদেশের উত্তর জনপদের লাখ লাখ কৃষকের বোরা চাষাবাদ ব্যাহত করছে। ফলে দিন দিন অকার্যকর হয়ে পড়েছে দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প।
এ অবস্থায় পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করে তিস্তা নদী বাঁচানোর আকুতি জানিয়েছেন লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরসহ এ অঞ্চলের অধিবাসীরা। শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়ে নদী। জেগে ওঠে অসংখ্য চর। বর্ষায় হঠাৎ করে পানির ঢল নামায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এতে বাড়িঘর গ্রামগঞ্জ-হাটবাজার, রাস্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পুল-কালভার্ট সব ভেঙে তছনছ হয়ে যায়।
তিস্তা সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী বলেন, তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের আওতায় আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে সেচ কার্যক্রম শুরু হবে। বর্তমানে পানি স্বল্পতার কারণে সেচ সুবিধার লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে।