ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শাহজাদপুরে ১৩ ইউনিয়নে বন্যা

ভেঙে গেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক

এইচ এম আলমগীর কবির, সিরাজগঞ্জ
🕐 ৯:৫৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০১৮

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন এক কিলোমিটার সড়ক। এছাড়াও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় শাহজাদপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি, সোনাতুনি, খুকনি ও জালালপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৭টি গ্রামে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনকবলিত গ্রামগুলো হলো কৈজুরি ইউনিয়নের ভাটপাড়া, গুদিবাড়ি, জগতলা, ঠুটিয়া ও হাটপাচিল, জালালপুর ইউনিয়নের পাকুরতলা, ভেকা, বাঐখোলা, খুকনি ইউনিয়নের আরকান্দি ও ব্রাহ্মণগ্রাম, সোনাতুনি ইউনিয়নের ধীতপুর, শ্রীপুর, মাকড়া, সোনাতুনি, বড় চানতারা, বারপাখিয়া ও বানতিয়ার। ইতোমধ্যে এসব গ্রামের অন্তত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকানপাট, মসজিদ, ৫০০ বিঘা আবাদি জমি ও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বন্যা দুর্গতরা জানান, বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ভাটপাড়া এলাকায় যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের পাঁচটি স্থানের অন্তত এক হাজার ফুট এলাকার সিসি ব্লক ও জিও টেক্সপেপার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছরের ভাঙনকবলিত এলাকা মেরামত না করায় এবং এ বছর এখনো ভাঙন রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ভাঙনকবলিত আলমাস হোসেন বলেন, ‘ভাঙনের চিন্তায় রাতে ঘুমোতে পারি না। আট বার বাড়ি ভেঙেছে। প্রতিবারই সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আবারও যদি বাড়িঘর যমুনার পেটে চলে যায়, তবে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারব না।’
একই এলাকার আফসার আলী বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা এবারও ভাঙনের কবলে পড়েছেন। এখনো ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।’
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, টাকা না থাকায় আপাতত বাঁধ রক্ষায় কাজ করা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে।
পোতাজিয়া ইউনিয়নের মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার ভোরে সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় শাহজাদপুর এলজিইডি অফিসের প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা জলে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার পোতাজিয়া, কায়েমপুর, গাড়াদহ ও রূপবাটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন খান বলেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকার আশপাশে ফাঁকা কোনো স্থান না থাকায় মানুষকে দূর-দূরান্তে গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। তারপরও এসব মানুষের তালিকা তৈরি করে উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এনায়েতপুরের ভাঙনকবলিতদের অবস্থা বিবেচনা করে ইতোমধ্যেই সাড়ে তিনশ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জিআর বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছি। আশা করা যাচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বরাদ্দ পেলে ভাঙনকবলিতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’

 
Electronic Paper