চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসক সংকট
আব্দুর রব নাহিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
🕐 ৯:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০১৮
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি পাঁচটি হাসপাতালে অর্ধেকের বেশি চিকিৎসকের পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও চার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৭৯ চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৩৭ জন। অর্ধেকের বেশি চিকিৎসক পদ শূন্য থাকায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি আধুনিক হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও এর জনবল কাঠামো এখনো রয়ে গেছে ৫০ শয্যায়। তারপরও ৫০ শয্যার অনুমোদিত জনবল কাঠামোর ২১ জন চিকিৎসকের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১১ জন। দীর্ঘদিন থেকে এখানে চোখের চিকিৎসক নেই, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও প্রাথমিক চিকিৎসাও এখানে মিলছে না। কারণ এ বিষয়েও কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই দীর্ঘদিন। এরই মধ্যে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হতে যাচ্ছে হাসপাতালটি। ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে, খুব শিগগিরই এটি উদ্বোধন করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বাইরে, শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও একই রকম অবস্থা। এখানেও ২১ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১১ জন চিকিৎসক। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন নয়জন চিকিৎসক। নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক আছেন চারজন। এখানে পদ সংখ্যা ১০টি। আর ভোলাহাটে নয় পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র দুজন চিকিৎসক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসাপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সামান্যতম চিকিৎসা সেবা মিলছে না উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মুনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘জেলা সদরের একটা হাসপাতালে একজন হার্টের চিকিৎসক নেই। অর্ধেক পদই শূন্য। একটু কিছু হলেই রাজশাহীতে স্থানান্তর করে দেয়। এ প্রবণতা এখানে সবচেয়ে বেশি। মনে হয় কোনো রকমে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিতে পারলেই হয়, এ রকম অবস্থা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে করে রোগীদের বাড়তি খরচ গুনতে হয়। অনেক সময় রাজশাহী যেতে যেতে রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হয়। এমনকি অনেক সময় মারা যায় রোগী। এখনো সয়ংসম্পূর্ণ হতে পারল না আমাদের সরকারি হাসপাতালটি, এটা আমাদের কষ্ট বাড়ায়।’
চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন সায়ফুল ফেরদৌস মুহা. খাইরুল আতাতুর্ক জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হতে যাচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষের পথে। ২৫০ শয্যার জন্য প্রযোজনীয় লোকবল কাঠামো প্রস্তুত করে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালটি উদ্বোধনের আগেই নতুন জনবল অনুমোদন পাওয়া যাবে। তখন চিকিৎসক সংকট অনেকাংশেই দূর করা সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে বাড়বে সেবার মান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসক সংকট দূর করার কথাও জানান সিভিল সার্জন।