ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফারাক্কার প্রভাবে প্লাবন

জেলা প্রতিনিধি
🕐 ৩:১০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৩, ২০১৯

ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশে বন্যার কারণে ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো স্লুইসগেট খুলে দিয়েছে দেশটি। ফলে পদ্মা নদী বেষ্টিত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ডুবতে বসেছে। সোমবার ফারাক্কার ১১৯টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়ায় রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া ও পাবনা এলাকায় হু হু করে ঢুকছে পানি। হাজার হাজার পরিবার হয়ে পড়েছে পানিবন্দি-

রাজশাহী
ফারাক্কার প্রায় সবগুলো গেট খুলে দেওয়ার অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে পদ্মার পানি। পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় তলিয়ে গেছে অনেক ফসলি জমি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শত শত মানুষ। ভাঙন প্রতিরোধে বেশকিছু দিন ধরে মহানগরীর টি-বাঁধ এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ রাখা হয়েছে।

এদিকে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। শত শত হেক্টর জমির সবজি ও ফসল তলিয়ে গেছে। আরও নতুন নতুন এলাকায় প্লবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাবিবন্দি মানুষ তাদের গৃহসামগ্রী নিয়ে উঁচু জায়গায় চলে যাচ্ছে। চরের বাসিন্দা জিয়া জানান, তাদের নিচু অংশে ফসলসহ জমি তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে নতুন করে প্লবিত হচ্ছে ফসলি জমি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়ায় গঙ্গার পানি চলে আসছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে। ফলে রাজশাহীতে পদ্মায় পানি প্রবাহ বিপদসীমার ১৮ দশমিক ৫০ মিটারের কাছাকাছি চলে এসেছে।

নগরীর বড়কুঠি পয়েন্টে পাউবোর গেজ পাঠক এনামুল হক বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীতে পদ্মায় প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক শূন্য এক মিটার। এর আগে সকালে প্রবাহ ছিল ১৭ দশমিক ৯০ মিটার। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত দুই সেন্টিমিটার করে পানি প্রবাহ বাড়ছে পদ্মায়।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মায় প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলম। ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে বৃষ্টিপাতের কারণে পানি প্রবাহ বাড়তে পারে।

এদিকে, পদ্মায় পানি বেড়ে যাওয়ায় চরের গ্রামগুলো ডুবতে শুরু করেছে। পবা, বাঘা ও গোদাগাড়ীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এ বছরে গত আগস্ট মাসে পদ্মার পানি দ্বিতীয়বারের মতো বেড়েছিল। তখন রাজশাহীর দরগাপাড়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা ১৬ দশমিক ৭১ মিটার উঠেছিল। তারপর থেকে কমে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ফের পানি বাড়া শুরু হয়েছে। ওই সময় পানির উচ্চতা ছিল ১৫ দশমিক ৩৯ মিটার। গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় পদ্মার পানি উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ২০ মিটার। তারপর ধীরে ধীরে পদ্মা নদীর পানি বাড়তে থাকে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার চরখিদিরপুর ও মধ্যচরে বন্যা ও নদীভাঙন শুরু হয়েছে। মধ্যচরে পদ্মায় তীব্র ভাঙনে আড়াইশ পরিবারের ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। একই অবস্থা হয়েছে রাজশাহী বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের প্রায় পুরোটাই পানিতে তালিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান আজিজুল আযম জানান, তার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে সেখানকার প্রায় ১২০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে বাস্তুহারা হয়েছে। তার ইউনিয়নে তিন হাজার ৬০০ পরিবারের মধ্যে দুই হাজার ৫০০ পরিবার এখন জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান ইউপির চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বলেন, তার ইউনিয়নের পদ্মার ভাঙনে মধ্যচর এবার একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। আর চরখিদিরপুরের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শতভাগ পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা ও মহানন্দার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। হঠাৎ করে এ পানি বৃদ্ধির কারণ ভারতের ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া। চাঁপাইনবাবড়ঞ্জের অন্তত ১০টি ইউনিয়নের ৫০-৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আর পানিবন্দি ইউনিয়নগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়ন। পদ্মা নদীকে ঘিরেই আবর্তিত হয় এ ইউনিয়নের মানুষের জীবন। এখন গোটা ইউনিয়নটায় যেন পানি থৈ থৈ করছে। তবে এখানকার মানুষগুলো, খরার সময় যেন ধূ ধু বালুচরের বাসিন্দা হয়ে যান। ফসল ফলানোর প্রয়োজনীয় পানিও যেন তখন দুস্কর হয়ে দাঁড়ায়। ফারাক্কা বাঁধের কারণেই এমন নির্মমতার সঙ্গে তাদের বসবাস মনে করেন পদ্মাপাড়ের মানুষগুলো।

পাকা ইউনিয়নের বাসিন্দা সাহিত্যকর্মী রাসেল রহমান বলছিলেন, পদ্মা-গঙ্গার মোহনায় গড়ে উঠা চরে আমরা প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করছি, ফারাক্কা বাঁধের কারণে আমরা দুর্যোগের মধ্যেই থাকি। খরার সময় একটুকুও পানি পায় না। বর্ষায় ভেসে যায় আমাদের বসতভিটা। এবারের বন্যাও ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় এমন ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পাকা ইউনিয়ন গোটাটায় ডুবে গেছে।

স্থানীয় কলেজের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ভারত নদীর স্বাভাবিক গতি প্রকৃতি বাঁধাগ্রস্ত করে নিজেদের প্রয়োজনে পানি ধরে রাখার জন্য ফারাক্কা বাঁধ দিয়েছে। এতে করে নদী তার স্বাভাবিক গতি হারাচ্ছে। এটা জীব বৈচিত্র্যসহ গোটা পরিবেশের জন্যই বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে। নদীকে তার স্বাভাবিক গতিধারায় প্রবাহিত হতে দেওয়ায় সবার জন্যই মঙ্গল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান জানান, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা গতকাল জেনেছিলাম ৭২ ঘণ্টা পানি দ্রুত গতিতে আসবে। সেই হিসাবে আরও ৪৮ ঘণ্টা পানি আসবে। এটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত পদ্মা ও মহানন্দায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ সেন্টিমিটার করে। বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উভয় নদীতেই তিন সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে পদ্মায় বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা ধারণা করছি আগামী ৪ অক্টোবর মহানন্দার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

বিপদসীমা অতিক্রমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে বন্যার আশঙ্কা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চাল প্লাবিত হয়েছে, পানি যেহেতু উজান থেকে আসছে, পানি আসার গতি প্রকৃতির উপরই বিষয়টি নির্ভর করছে। বন্যার আশঙ্কা নেই এমনটা বলা যাবে না এখনি। আমরা আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান ফৌজদার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পাঁচটি ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিবগঞ্জের পাকা ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাতটি ওয়ার্ডই প্লাবিত হয়েছে। ১০ ইউনিয়নের প্রায় ৪২ হাজার মানুষ এ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। এর ভিত্তিতেই প্লাবন এলাকায় সহায়তা হিসাবে চাল বিতরণ শুরু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শুকনো খাবার ১০ হাজার প্যাকেট ও ১০ টন চাল ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা সহায়তার জন্য চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুর-রাজবাড়ী
ফরিদপুরে পদ্মা নদীর নদীর পানি গতকাল বুধবার বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে আতঙ্ক জেঁকে বসেছে পদ্মাপাড়ের মানুষের মাঝে। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এরই মধ্যে নতুন করে ফরিদপুরের পাঁচটি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের ফসলি জমি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। তিনি বলেন, পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্টরা সচেষ্ট রয়েছেন।
এদিকে, প্রবল স্রোত ও পানি বৃদ্ধির ফলে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৫০০ হেক্টর ফসলি ও নিচু জমি তলিয়ে গেছে। সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ও ডিগ্রিচর ইউনিয়নের নিচু অংশে ফসলসহ অনেক জমি তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা মঙ্গলবার ছিল ছয় সেন্টিমিটার। গত কয়েকদিন ধরেই পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সোমবার পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে।

স্থানীয়রা বলছেন, পদ্মায় যে হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা নদী ও নদী তীরবর্তীসহ আশপাশের মানুষের জন্য শুভ সংবাদ নয়। বড় ক্ষতির আগেই সরকারিভাবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার সক্ষমতা অর্জন করে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে মনে করছেন তারা। উজানের পানি বৃদ্ধির গতি জানান দিচ্ছে, যে কোনো সময়ই বিপদ আসতে পারে।

অ্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এরই মধ্যে নতুন করে রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত ইউনিয়নগগুলো হলো- গোয়ালন্দ উপজেলার দেবোগ্রাম, দৌলতদিয়া, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানুপুর, বরাট ও কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া। শুধু প্লাবিত নয় নতুন করে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবোগ্রাম ইউনিয়নে পদ্মার তা-ব সবচেয়ে বেশি। এতে করে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। দফায় দফায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাল্লা দিয়ে গ্রাস করছে নদীপাড়ের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।

স্থানীয়রা জানান, গত পাঁচ দিনে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ঢল্লাপাড়া, বেপারী পাড়া, জলিল ম-লের পাড়া এবং দেবোগ্রাম ইউনিয়নের কাওলজানি গ্রামের কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে প্রায় ২০০ পরিবার। তাছাড়া ওই এলাকার প্রায় ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।

এ ছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ এর সংলগ্ন তিন শতাধিক বসতবাড়ি, একটি মসজিদসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। সরেজমিনে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন ঢল্লাপাড়া, বেপারী পাড়া ও হাতেম মেম্বর পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক পরিবার তাদের দীর্ঘদিনের ঠিকানা থেকে সহায় সম্বল গুটিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই একাধিকবার ভাঙনের শিকার হওয়া পরিবার রয়েছে। তাদের শেষ জমিটুকু হারিয়ে পরবর্তী ঠিকানাও মেলা কঠিন হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে হাসেম ফকির, আবুল কাসেম ফকির, মানিক শেখ, কালাম সরদার, লুৎফর সরদার, আব্দুল রশিদ সরদারের বাড়িসহ প্রায় ৩০০ বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ সময় অনেকেই নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ভয়ে তাদের ঘর ভেঙে কোথাও রাখার জায়গা না পেয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে স্তূপ করে রাখতে দেখা যায়।

দৌলতদিয়া বেপারী পাড়ার আব্দুস সাত্তার বেপারী জানান, গত কয়েক দিনে বেপারী পাড়া ও ঢল্লা পাড়ার ৭০টি, হাতেম ম-লের পাড়ার ৫০টি এবং দেবগ্রামের কাওয়ালজানি, মুন্সিপাড়া ১৬০টি পরিবারসহ প্রায় ৩০০ পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। ভাঙনের শিকার দৌলতদিয়া এলাকার ঢল্লাপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম জানান, ওই এলাকায় তাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি ছিল। গত কয়েক বছরে পাঁচ বার ভাঙনের পর প্রায় ২০ বিঘা জমি অবশিষ্ট ছিল। চলতি দফায় পাঁচ দিনের ভাঙনে তাও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যের জমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৫০ হাজার টাকার খরচ করে টমেটো, বেগুন, কপিসহ নানা জাতীয় সবজির বীজ রোপণ করেছিল। সবই নদীগর্ভে চলে গেছে।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতর আলী সরদার বলেন, কয়েক বছরের পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে ইউনিয়নটির অর্ধেকের বেশী নদীতে চলে গেছে। এই ইউনিয়নের প্রতি কারও কোনো নজর নেই। মানুষের হাহাকার দেখে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ প্রশাসনের কাছে বার বার গিয়েছি। আমাদের একটিই চাওয়া ছিল ত্রাণ নয়, নদী শাসন চাই। কিন্তু সে বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এদিকে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাটের উজানে দেবগ্রামের কাওলজানি এলাকার ভাঙন দেখে ঘাট এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। লঞ্চঘাট এলাকার পাশে থাকা মরিয়ম বিবি ও আব্দুল খালেক শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, লঞ্চঘাটের সামান্য দূরে কাওলজানি এলাকায় যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে কখন যেন ঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। ভাঙন শুরু হলে মুহুর্তের মধ্যে ঘাট এলাকার সব বিলীন হয়ে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, ভাঙন অব্যাহত থাকলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট হুমকির মুখে পড়বে।

ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী বলেন, এভাবে ভাঙতে থাকলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাটরক্ষা করা মুশকিল হয়ে পড়বে। তাই অন্তত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ঠিক রাখতে জরুরী ভিত্তিতে ফেরি ও লঞ্চঘাট রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীসহ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকেও জানাবো।

কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ার পদ্মার পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেড় হাজারের অধিক পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩৮ গ্রামের ১০ হাজার পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তলিয়ে গেছে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল। পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দৌলতপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পদ্মার পানি ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বুধবার পর্যন্ত ১৪ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার এসে দাঁড়িয়েছে। বিপদসীমা অতিক্রম কর পাঁচ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। কয়া ইউনিয়নের কালোয়া গ্রামে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের ৩০ মিটার ধসে গেছে। এতে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করছে।

গতকাল সকালে ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পেরিয়ে পানি লোকালয়ের ঢুকে পড়েছে। এলাকাবাসী বালির বস্তা দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তবে যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে বালির বস্তা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না বলে জানান স্থানীয়রা।

এছাড়াও উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পদ্মার পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা পানি বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে দৌলতপুর উপজেলার অর্ধেক অঞ্চল পানির নিচে তালিয়ে যাবে। যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ওই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িক ছুটি দেওয়া হয়েছে। বন্যাদুর্গতদের জন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলো খোলা রাখা হয়েছে।

গত সোমবার ফারাক্কা বাঁধের ১১৯টি স্লুইসগেট খুলে দেয় ভারত। সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় দ্রুত পানি বাড়ছে পদ্মায়। এতে কুষ্টিয়ার চরাঞ্চল প্লাবিত করে লোকালয়ের দিকে ধেয়ে আসছে পানি। এর সঙ্গে গত তিন দিনের টানা বর্ষণের বন্যাদুর্গত মানুষের সীমাহীন কষ্টের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৬ বছর পর পদ্মার পনি বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৪ সেন্টিমিটার। সেখানে গতকাল বুধবার পর্যন্ত হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছিল ১৪ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার পানির মাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার।

সোমবার ছিল ১৪ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। গড়ে প্রতি দিন ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। সর্বশেষ পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রধান শাখা গড়াই নদেও অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে। বুধবার গড়াইয়ের পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। গড়াই নদীর বিপদসীমা হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা থেকে মাত্র পয়েন্ট ৩০ সেন্টিমিটার দূরে। গড়াই নদীতে পানি বাড়ায় জিকে ঘাট ছাড়াও বড় বাজার এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে বেশকিছু ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি বাড়তে থাকলে কুষ্টিয়া রক্ষা বাঁধসহ অন্যান্য স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

অন্যদিকে, কয়া ইউনিয়নের কালোয়া গ্রামে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের ৩০ মিটার ধসে গেছে। গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় কয়া ইউনিয়নের কালোয়া অংশে হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়। দেখতে দেখতে বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ সময় বাঁধের ওপর বসবাসরত কয়েকশ পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। এদিকে প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছিলেন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে গত বছরের ৩০ জুন অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ দেখিয়ে কাগজে কলমে প্রকল্পটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রকল্পের নির্ধারিত পরিকল্পনাসহ নকশা লঙ্ঘন, অর্থ অপচয় এবং বরাদ্দকৃত টাকা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় না করে অব্যয়িত রাখায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখে পড়েছে। ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর প্রথম ভাঙন শুরু হয়। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ওইদিন বাঁধের ৫০ মিটার এলাকা পদ্মারগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তার মাত্র দুই মাস আগে প্রমত্তা পদ্মার ভাঙন থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি রক্ষায় বাঁধটি নির্মাণ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ২টা ১০ মিনিটে একই অংশে হঠাৎ করেই আবারও ভাঙন শুরু হয়। দেখতে দেখতে মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যে বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে নদী পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, রক্ষা বাঁধ আমাদের অভিশাপ ডেকে এনেছে। আমাদের বাড়ি নদী থেকে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু ঠিকাদাররা কাজ করার সময় বাড়ির সীমানা থেকে কয়েক মিটার কেটে ব্লক ফেলেছে। যার ফলে নদী একেবারে ঘরের কাছে চলে আসে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুণ্ডু জানান, কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের কালোয়া এলাকার কিছু অংশ ভেঙে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়েছে। ইতমধ্যে ভাঙন এলাকায় নয় হাজার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকনো হয়েছে। ভাঙন রোধে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আরও দুই হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

পাবনা
পাবনার হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ১৬ বছর পর গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। সর্বশেষ ২০০৩ সালে এ পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল বলে পাকশী বিভাগীয় রেলের সেতু ইঞ্জিনিয়ার অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে পদ্মা ও এর শাখা নদীতে পানি বাড়ায় পাবনা জেলার নিম্নাঞ্চলের বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, উজান থেকে প্রবল বেগে পানি ধেয়ে আসায় পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রমের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক এম কবীর মাহমুদ। তিনি বলেন, পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্টরা সচেষ্ট রয়েছেন। জেলা প্রশাসন পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজর রাখছে।

পাবনা পাউবোর হাইড্রোলজি বিভাগের উত্তরাঞ্চলীয় নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম জহিরুল হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। গতকাল দুপুর ১২টায় বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। এর আগে, গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার পরিমাপ অনুযায়ী পানি বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পাউবো পাবনার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সানজানা নাজ জানান, বুধবার দুপুর ১২টায় পদ্মার পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার সাত সেন্টিমিটার উপরে। গত কয়েকদিন ধরেই পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে ৫-৬ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

এদিকে পদ্মায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৫০০ হেক্টর ফসলি ও নিচু জমি প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার একর জমির নানা জাতের ফসল।

ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউপি চেয়ারম্যান রানা সরদার বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এ এলাকায় পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। এবার উজানে প্রবল বর্ষণ ও ধেয়ে আসা পানিতে পদ্মা নদীর কোমরপুর থেকে সাঁড়াঘাট পর্যন্ত রক্ষা বাঁধের মাত্র এক ফুটেরও নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস জানান, তার ইউনিয়নের রূপপুর সড়কের নিচু অংশের ফসলসহ জমি তলিয়ে গেছে।

 
Electronic Paper