ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শাহজাদপুরসহ চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৯, ২০১৮

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রাউতারা নবনির্মিত রিং বাঁধটি কেটে দেওয়ায় উপজেলার পশ্চিম এলাকার তিনটি ইউনিয়নসহ চলনবিল অঞ্চলের ৯ উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত শনিবার উপজেলার রাউতারায় সকাল ও দুপুরে দুদফায় দুস্থানে রিংবাধটি কেটে দিয়েছে স্থানীয় মৎস্যজীবী ও নৌকা চালকরা।

এতে কাঁচা ঘাসের মাঠ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্যের দাম বস্তা প্রতি ২০০-৩০০ টাকা করে বেড়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলের গো-খামার মালিক ও গবাদি কৃষকরা তাদের গবাদি পশুর খাদ্য নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১ মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১ কোটি ৫১ লাখ ১৫ হাজার ৫৮১.৯৬ টাকা ব্যয়ে শাহজাদপুর উপজেলার পেতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা সুইচ গেট সংলগ্ন ১২০০ মিটার দৈর্ঘ্য এ রিং বাঁধটির নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর বন্যার হাত থেকে এ অঞ্চলের কৃষকদের রক্ষার জন্য সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এটি নির্মাণ করে। আর প্রতি বছরই এ এলাকার মৎস্যজীবী ও নৌকা চালকরা তাদের সুবিধার জন্য এ বাঁধ কেটে দেয়।
আহমেদ আলী ও আফসার খানসহ অনেক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের মাধ্যমে এ বাঁধ নির্মাণের নামে গত ৩৭ বছরে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা এভাবে হরিলুট করেছেন। এ বছরও তাই করলেন।
এলাকাবাসী জানান, ১৯৯৪ সালের পর থেকে এ অঞ্চলে ধান কাটা হয়ে গেলে বন্যার পানি বৃদ্ধি পায়। এতে কোনো ফসলহানি হয় না। তারপরেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ফসল রক্ষার নামে প্রতি বছরই এ বাঁধ নির্মাণ করে। এ বাঁধ নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের বিস্তৃর্ণ জমি ও জলাশয়ে দেরিতে বন্যা হয়। এতে মৎস্যজীবীরা আশানুরূপ মাছ শিকার থেকে বঞ্চিত হন। বাঁধ থাকলে বন্যা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে। দেরিতে বন্যা হলে নৌকা মালিকরা লোকসানে পড়েন। তাই তারা এ  লোকসানের হাত থেকে রেহাই পেতে ধান উঠে যাওয়ার পরপরই বালু দিয়ে তৈরি এ বাঁধ কেটে দেয়।
এ বছরও তারা সেই কাজটিই করলেন। গত শনিবার তারা এ বাঁধ কেটে দিয়েছে। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় শাহজাদপুর উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের কায়েমপুর, রূপবাটি ও পোতাজিয়া ইউনিয়নের সকল গ্রামসহ চলনবিল অঞ্চলের ৮ উপজেলার প্রায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমি ফসলি জমি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া নিচু অনেক কাঁচা রাস্তা-ঘাটও এ বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে এ অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
পোতাজিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ব্যাপারী জানান, আমাদের এখানকার কৃষকরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ নিম্নমানের বালু দিয়ে তৈরি লো-হাইড রিং বাঁধ নির্মাণে খুবই ক্ষুব্ধ। নদীতে পানি বাড়লেই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ভয়ে কৃষক হতাশ। তাই তারা আর এ নিম্নমানের বালু দিয়ে তৈরি রিং বাঁধ চায় না। তারা স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ চায়।
 উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খান বলেন, সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বাঁধ যারা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে কেটে দিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের মাধ্যেমে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

 
Electronic Paper