নতুন এলাকা প্লাবিত
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
🕐 ৪:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০১৯
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি কমে বিপদসীমার সামান্য উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে গত কয়েকদিন যাবৎ বাঙালী নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধিতে গ্রামের পর গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করে নতুন করে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাঙালী নদীর পানিতে সারিয়াকান্দি সদর,হাটশেরপুর,নারচী,ফুলবাড়ী ও ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকার সবকটি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে । বাঙালী নদীর বন্যার কারনে বেশ কয়টি কাঁচা এবং পাকা রাস্তা ভেঙে গেছে। লোকজন বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নিচ্ছে। বসতবাড়ি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফসলি জমি, পুকুর, মুরগির খামারে বন্যার পানি উঠে বাঙালী নদীর বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, বাঙালী নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বিপদ সীমার ৯৯ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদ জানান, বাঙালী নদীর বন্যার কারণে ২১টি গ্রামের সবকটি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করে ৪হাজার পরিবারের কমপক্ষে ১৬হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে এবং শতকরা ৮০ ভাগ ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। ২শ মুরগির খামারে বন্যার পানি উঠেছে। অর্ধশতাধিক পুকুর ডুবে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
হাটশেরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান জানান, শুধু মাত্র বাঙালী নদীর পানি বৃদ্ধিতে নতুন করে ৫টি ওয়ার্ডের ৭টি গ্রামের ১হাজার ৩শ ৪৪টি পরিবার পানিবন্ধি হয়েছে। কাঁচা পাকা রাস্তা ডুবে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি উঠায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। ৭টি গ্রামের বসতঘরে পানি উঠায় লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। নারচী ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বান্টু জানান, বাঙালী নদীর পানির চাপে নারচী ইউনিয়নের গোদাগাড়ী, চরগোদাগাড়ি, হরিনা গ্রামে কাঁচা রাস্তা ভেঙে এক গ্রামের সাথে অন্য গ্রামের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
একর পর এক ফসলের মাঠ তলিয়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো জানান, ৮৮ সালের বন্যার পর এবারের মতো বাঙালী নদীতে এত বড় বন্যা কোন দিন দেখেননি। ভেলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রুবেল উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের সবকটি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাঙালী নদীর পানির তীব্র স্রোতে জোড়গাছা ব্রীজের সংযোগ সড়ক ধসে গেছে এবং বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা গেছে, বন্যার কারণে গত ২০ জুলাই পর্যন্ত সারিয়াকান্দিতে ২৪হাজার ৩শ ৩৫টি পরিবারের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা ছিল ৯০ হাজার ৫শ ২০ জন এবং ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি জমির পরিমান ছিল ৭হাজার ২শ ৫ হেক্টর।