দিনমজুরের বিরুদ্ধে ১২ জেলায় ৭০ মামলা
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
🕐 ৫:২২ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৯
হতদরিদ্র সাইফুল ইসলাম। ভিটেমাটিও ছিল না। অন্যের সাহায্য-সহযোগিতায় এক খণ্ড জমি কিনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন। সেই জমিই কাল হয়েছে সাইফুল ও তার পরিবারের। তাদের বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা হয়েছে। কেবল নিজ জেলাতে নয়, কাছে-দূরের এক ডজন জেলায়। এমনকি যারা সহযোগিতা করতে গেছেন, তারাও মামলার আসামি। সম্প্রতি একসঙ্গে দুই জেলায় তিনটি মামলায় পরোয়ানা জারি হয়। এ খবর শোনার পর সাইফুলের এক ভাই মারা গেছেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। চাষের জমি বলে কিছু নেই, ভিটেমাটিও ছিল না। তবে ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল চৈারখোর মহল্লায় এক লাখ টাকায় ৯ শতাংশ জমি কেনেন। নিজের কিছু জমানো টাকা ছিল। পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন আর্থিক সহায়তা দেন। পরে ওই জমিতে টিনের ঘর তুলেছেন। রাজশাহী নগরের সাগরপাড়া মহল্লার তপন মজুমদার এ জমির মালিক ছিলেন। এ জমির পাশে জমি রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলীনগরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামের। বাড়ি করার কিছুদিন পর ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তানোর থানায় একটি মামলা করেন শফিকুল ইসলাম। এতে তাকে (সাইফুল), তার ভগ্নিপতি আবদুস সামাদ, জমি বিক্রেতা তপন মজুমদার ও প্রতিবেশী শওকতকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষেতের ফসল নষ্ট করা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়।
ওই ঘটনার এক মাসের মাথায় দ্রুত বিচার আইনে আরেকটি মামলা করেন শফিকুল। এতে সাইফুল, তার স্ত্রী হারেসাসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়। এরপর আরও দুটি মামলা করেন তিনি। সর্বশেষ মামলা হয়েছে গত ১৭ এপ্রিল রাজশাহীতে। এটি ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শনের মামলা। সবমিলিয়ে গত দুই বছরে মোট ৭০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি মামলা হয়েছে রাজশাহীর বাইরে ১০টি জেলায়। ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও নরসিংদীতে চারটা করে। নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে দুটি করে। আর চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাটোর, নওগাঁ, পাবনায় একটি করে মামলা হয়েছে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের জমিতে রাতের অন্ধকারে আসামিরা বাড়ি করেছে। এ জন্য তিনি উচ্ছেদের মামলা করেছেন। আর জমির ফসল নষ্ট করার জন্য আরেকটি মামলা করেছেন। এর বাইরে জেলায় বা জেলার বাইরে কোনো মামলা করার কথা অস্বীকার করেন তিনি। এমনকি তার ভাই রফিকুল ইসলামের বেনামিতে মামলা করার কথাও তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।