ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তিন শিক্ষার্থীর ১০ শিক্ষক

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
🕐 ১০:০৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৭, ২০১৯

মাদ্রাসার সব শ্রেণিকক্ষের দরজা বন্ধ। সুপারিনটেনডেন্টসহ শিক্ষকদের কক্ষও তালাবদ্ধ। এর মাঠের মধ্যে একজন কৃষক গরু চড়াচ্ছেন। পাশেই দুজন শিশু খেলা করছে। গত সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা সদরের খাস কাউলিয়া দক্ষিণ জোতপাড়া দাখিল মাদ্রাসা সরেজমিনে গেলে এমন চিত্র দেখা যায়। এ সময় মাদ্রাসা মাঠে সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে দৌড়ে আসেন আয়া সেলিনা বেগম। এ সময় তিনি বলেন, আজ মাত্র তিনজন ছাত্র উপস্থিত হয়েছিলো। শিক্ষক ছিলেন ১০ জন। ছাত্র কম থাকায় সামান্য কিছুক্ষণ আগে (১২টার দিকে) মাদ্রাসা বন্ধ করে শিক্ষকরা চলে গেছেন।

মাদ্রাসা মাঠে গরু চড়াতে আসা কৃষক মানিয়ার শিকদার বলেন, এ মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রী খুব কম আসে। আমরা নিজেরাই আমাদের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় দিতে চাই না। কারণ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করলে ভিক্ষা করে খেতে হয়। শিক্ষার্থী এত কম কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী আসলেও আজকে একেবারেই কম। মাদ্রাসাতে কেউ পড়তে চায় না বলে দাবি করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের উদাসিনতায় শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান মুখী হচ্ছে না। সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেও তারা নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে না এসে নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। আর এজন্য উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্তাদের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করছেন তারা।

মাদ্রাসা সুপার লুৎফর রহমান জানান, রেজিষ্টারে যা প্রয়োজন তা মেইনটেইন করে চলি। বাস্তবতায় অনেক প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে আছি। এলাকার পোলাপান হতদরিদ্র। তারা পড়াশোনা বাদ দিয়ে বেশিরভাগই যমুনায় মাছ ধরতে যায়। এ কারণে উপস্থিতি খুবই নগন্য হয়। প্রতি ক্লাসে ৫-১০ জন করে উপস্থিত হয় বলে তিনি স্বীকার করেন। সুপার আরও বলেন, পাঁচটি শ্রেণিতে মোট ১৬৬ জন শিক্ষার্থীর নাম রেজিষ্টারে রয়েছে। মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৫ জন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম ওবায়েদ জানান, মাদ্রাসাটিতে দীর্ঘ দিন হলো পরিদর্শনে যাওয়া হয়নি। তবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উপস্থিতি অনেক কম হলেও শিক্ষকরা নিয়মিত উপস্থিত থাকেন। নদী ভাঙনের কারণে এসমস্যা বলেও জানান তিনি।

ইউএনও আবু তাহির জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এরকম অবস্থা মেনে নেওয়া হবে না। কারও দায়িত্বে অবহেলা পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
Electronic Paper