জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফ আলীর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি বরাদ্দের হতদরিদ্র ও গরীব মানুষের ভিজিএফের চাল নিজ পরিবার ও বিভিন্ন নাম মাস্টার রোলে তালিকাভুক্ত করে নিজ স্ত্রী ও মেয়েসহ আত্নীয়-স্বজনের নামে ভিজিডির চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া গর্ভবতি কার্ড, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিতে ৩-৪ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পরে ১১জন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান তাকে নানা অনিয়ম ও অর্থ আত্নসাতের বিষয়ে সর্তক করে দেন। তখনই বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। একপর্যায়ে তার নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে ১১জন মেম্বর ও নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মজনু সরকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কে. এম মনিরুজ্জামান বলেন, আমাকে ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করবো। এর আগে গত ৩০ জুলাই নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আশরাফ আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফ আলী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি বরাদ্দের হতদরিদ্র ও গরীব মানুষের জন্য ঈদ উপলক্ষে বিতরণকৃত ভিজিএফের চাল নিজ পরিবার ও বিভিন্ন নাম মাস্টার রোলে তালিকাভুক্ত করে নিজ স্ত্রী ও মেয়েসহ আত্নীয়-স্বজনের নামে ভিজিডির চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের টাকাও আত্নসাত করেন। গত ঈদুল আজহায় তার স্ত্রী, আপন দুই ভাই, চাচাতো ভাইয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করে (মাস্টার রোল অনুযায়ে যার ক্রমিক নং ৬৯২, ৬৯৩,৬৫৪, ৬৫৫ ও ৬৫৭) ভিজিএফের চাল তুলে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া গত ২০২১-২২ চক্রের ভিজিডি তালিকায় ইউপি সদস্য আশরাফ আলী তার স্ত্রী ডলি খাতুন (৩৪৫নং ক্রমিক) আপন ভাবি মিছিরোন নেছা (ক্রমিক নং-৩৪৯) আরেক ভাবি ফরিদা খাতুন (ক্রমিক নং-৩৫৩) নাম অন্তর্ভুক্ত করে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল তুলে আত্মসাৎ করেন। বর্তমানে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ভিজিডি তালিকায় পুত্রবধু শিউলি খাতুন (ক্রমিক নং-৩৪৫) নিজ মেয়ে আদুরী খাতুনের নামে ভিজিডির চাল তুলে আত্মসাৎ চলমান রয়েছে। যা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯-এর ধারা অনুযায়ী অপরাধ।

লিখিত অভিযোগে নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মজনু সরকার আরও উল্লেখ করেছেন, ইউপি সদস্য আশরাফ আলী ৯নং ওয়ার্ডের ট্যাক্স আদায়কারী আবু রায়হানকে গালিগালাজ করে তার কাছে থেকে ট্যাক্সের আদায়কৃত ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। যা এখন অবধি ইউনিয়ন পরিষদে জমা করেনি। এ ছাড়াও আশরাফ আলী গত ৩ মাস যাবত ইউনিয়ন পরিষদের মাসিকসভায় অনুপস্থিত থেকে নানান অপকর্মে জড়িত রয়েছেন।

এবিষয়ে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফ আলী নিজেকে সৎ দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট।