লিচু বাগান নিয়ে শ্বশুর-পুত্রবধূর দ্বন্দ্বে ১২লাখ টাকার ক্ষতি
মিজানুর রহমান, গুরুদাসপুর
🕐 ৮:৩৫ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৩
নাটোরের গুরুদাসপুরে শশুর সাবেক ওসি এবং পুত্রবধূ এসপি’র জমিজমা নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি মামলা। সেই মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অসহার লিচু ব্যবসায়ীরা। উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মামুদপুর মৌজায় ইউসুব আলীর ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত ৪ দাগে ৬ বিঘা জমিতে ৬টি লিচু বাগান লিজ নেন ব্যাবসীরা। এতে শশুর পুত্রবধূর পাল্টাপাল্টি মামলার কারণে বাগানের প্রায় ১২লক্ষাধিক টাকার পাকা লিচু গাছ থেকে ঝরে পরে নষ্ট হয়েছে।
মামলার নথি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় ইউসুব দারগার ওই সম্পত্তির ৬বিঘা জমি লিজ নেন একই এলাকার লিচু ব্যাবসায়ী আব্দুল মান্নানের ছেলে মনছের মন্ডল, শুকুর প্রামানিকের ছেলে আশরাফ আলী, মনজিল মন্ডলের ছেলে আনোয়ার মন্ডল, মৃত মকদম প্রামানিকের ছেলে কুরবান আলী প্রমানিকসহ ১৫ জন ব্যাবসায়ী ৯লাখ ৭০হাজার ৫শ’ টাকায় এক মৌসুমের জন্য ওই বাগানের লিচু কিনে নেন। লিচুর বাগান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যাবতীয় খরচও করেন তারা। কিন্তু বাগানের লিচু ভাঙ্গার সময় বাগরা বাঁধে শশুর ইউসুব আলী (অবসরপ্রাপ্ত ওসি) এবং পুত্রবধূর ফরিদা পারভীনের (উচ্চ পদস্থ চাকরিজীবি) মধ্যে। দুই পক্ষ থেকেই ১৪৪ধারা জারি করা হয় ওই বাগানের উপর।
এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লিচু ব্যাবসায়ীরা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমারা কাগজপত্র দেখে মূল মালিকের নিকট থেকেই বাগানগুলো লিজ নিয়েছিলাম । শ্বশুর ও তার পুত্রবধূর দ্বন্দ্বে ওই বাগানে ১৪৪ধারা জারি হওয়ায় লিজ নেয়া ব্যবসায়ীরা লিচু পাড়তে না পারায় নষ্ট হচ্ছে লিচু। এতে আমাদের প্রায় ১২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে চলছি। এদিকে ১৯ মে ফরিদা পারভীন লোকবল পাঠিয়ে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার লিচু জোর করে পেরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেন লিজকৃত ব্যবসায়ীরা।
এব্যাপারে ইউসুব আলী জানান, এই জমির মালিক ক্রয়সূত্রে মালিক আমি। আমার ছেলে শফিকুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর আমার বউমার অংশ ভাগ করে দিয়ে সিমানা নির্ধারণ করে দিয়েছি। নাতিদের অংশও রাখা আছে। তার পরেও তিনি কেন আমার সাথে বাধ সাধছে আমার বুঝে আসছে না।
এবিষয়ে তার পুত্রবধূ ফরিদা পারভীন মুঠোফোনে জানান, আমার অবুজ শিশুদের ফাঁকি দিয়ে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আমার তিন ননদকে রাজশাহীর দেড় কোটি টাকার ১৮টি ফ্লাট এবং রংপুরের ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার সম্পত্তি তার তিন মেয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। আমার এতিম ছেলে মেয়েকে কেন সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করলেন। আমার কাছে সকল নথিপত্র আছে। তবুও আমি কিছু বলিনি। আমাকে এবং আমার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। আমি একজন চাকরিজীবি নারী। কোন প্রকার ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আর আমার কোন লোকবল নেই তাই বাগান থেকে লিচু পারার প্রশ্নই আসেনা। আমি একজন আইনের লোক তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই ওই বাগানে ১৪৪ধারা জারি করতে বাধ্য হয়েছি।