ইউএনও'র পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
মাহবুবুজ্জামান সেতু, মান্দা (নওগাঁ)
🕐 ৮:৪৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৯, ২০২২
মুজিববর্ষে অনুদান প্রদানের কথা বলে নওগাঁর মান্দায় দুই মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কাছ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনালী ব্যাংক মান্দা শাখার ব্যবস্থাপকের নাম ভাঙিয়ে ওই তিন পরিবারের কাছ থেকে টাকাগুলো হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনায় ভুক্তভোগী এক মুক্তিযোদ্ধা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রতারনার শিকার মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের কালীগ্রাম এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা নিত্য নিরঞ্জন আচার্য (৭১) ও একই ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা দৈবকি নন্দন প্রামাণিক (৭০)। অন্যদিকে প্রতারনার শিকার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি নাম ও পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
জানা যায়, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাজু আহমেদ তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলফোন থেকে মুক্তিযোদ্ধা নিত্য নিরঞ্জন আচার্যের নম্বরে ফোন দেন। এ সময় মেম্বার রাজু আহমেদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিকের ০১৬১০-৯৩৯৯০৪ নম্বরে কথা বলতে বলেন।
মুক্তিযোদ্ধা নিত্য নিরঞ্জন ওই নম্বরে ফোন দিলে অপর প্রান্ত থেকে তা রিসিভ করে নিজেকে মান্দার ইউএনও বলে পরিচয় দেন। ইউএনও পরিচয়ে ওই ব্যক্তি এ সময় বলেন এটি তাঁর ব্যক্তিগত নম্বর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা নিত্য নিরঞ্জনের নামে ২ লাখ ৯৫ হ্জাার টাকার অনুদানের চেক সোনালী ব্যাংকে আছে। তথাকথিত ইউএনও এ সময় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারের আরেকটি নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।
প্রতারনার শিকার মুক্তিযোদ্ধা নিত্য নিরাঞ্জন আচার্য বলেন, ‘আমি ওই নম্বরে ফোন দিয়ে পরিচয় দিলে অপর প্রাপ্ত থেকে ফেরতযোগ্য জামানত হিসেবে ৬২ হাজার টাকা দাবি করেন সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি। ব্যাংক বন্ধ থাকায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ এ টাকা পাঠানোর জন্য বলা হয়। পরে আমি ‘নগদ’ একাউন্টে ৬২ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই।’
একই কায়দায় উপজেলার রামনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দৈবকি নন্দন প্রামানিকের কাছ থেকে ৬৩ হাজার হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রের সদস্যরা।
নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার এক সন্তান বলেন, শনিবার বিকেলে একজন গ্রামপুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়ে একইভাবে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তথাকতিথ ইউএনও। এভাবে কাছ থেকেও ১০ হাজার হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, অনুদানের কথা বলে প্রতারনার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বীরমুক্তিযোদ্ধা নিত্য নিরঞ্জন আচার্য থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করছেন থানার উপ-পরিদর্শক সুব্রত কুমার।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর উপজেলার সকল চেয়ারম্যান ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সর্তক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।