নাটোরে যুবককে আটকের পর টাকা আদায়ের অভিযোগ
নাজমুল হাসান, নাটোর
🕐 ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২২
নাটোরের সিংড়ায় বিধবা নারীর সাথে ইউনুস আলী নামে এক যুবককে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে লক্ষাধিক টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী ও যুবলীগের কর্মী সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।
সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, বাঁশবাড়িয়া গ্রামে ধান কাঁটতে এসে এক বিধবার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পাশ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল গ্রামের ইউনূস আলীর। এরই সুত্র ধরে সোমবার রাতে বিধবার বাড়িতে যায় ইউনুস আলী। বিষয়টি বুঝতে পেরে রাত একটার দিকে তাদের দুজনকে হাতেনাতে আটক করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা।
পরে ইউনুস আলীকে বারান্দার খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী, ইউপি সদস্য কুরবান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন আরোন, যুবলীগ নেতা সবুজ আলী, সাইফুল ইসলাম, শাহিন আলম, সাদ্দাম হোসেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে ইউনূসকে তার অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা। এঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী ও যুবলীগের কর্মী সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংখ্যালঘু বিধবার জমির দলিল গ্রামের মজিবুর রহমান নামের একজনের কাছে রেখে আনুমানিক ৭০ হাজার টাকা ও যুবকের বাবার কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা নিয়েছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা।
দলিল বন্ধক রাখা মজিবুর রহমান বলেন, বিধবা নারী আজ আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু কত টাকা বলা যাবে না, সমস্যা আছে। টাকার কথা ঐ নারী নিজেই বলবে।
যুবলীগ নেতা সবুজ আলী জানান, আমরা রাতে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করি। সকালে ইউনুস আলীর বাবা বড়াইগ্রামের জনপ্রতিনিধিসহ এসে তাকে জুতা মেরে নিয়ে গেছে। তবে আমরা কোনও টাকা নেইনি। দুপুরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলীর মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। বিকেলে তাকে আটক করে পুলিশ।
ইউপি সদস্য কুরবান আলী বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, সকাল থেকে সারাদিন সিংড়ায় মিটিং এ ছিলাম। আমাকে ফাঁসানোর জন্য নাম বলেছে।
ইটালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান রাজা বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবাই খুবই শৃঙ্খল ও ভদ্র প্রকৃতির মানুষ। পুলিশ দুজনকে আটক করেছে শুনেছি। তবে তারা টাকা নিয়ে ঐ যুবককে ছেড়ে দিয়েছে কি না জানিনা।