প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষক
ফজলে রাব্বি
🕐 ১:৩৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২১
শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়ে থাকে। শিক্ষা ব্যতিরেকে কোনো জাতির উন্নয়ন, অগ্রগতি সম্ভব নয়। আর এ শিক্ষা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন শিক্ষক। আমরা পিতা-মাতার পরেই শিক্ষকদের মর্যাদা দিয়ে থাকি। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষের ভিতরের সব সৃজনশীল সম্ভাবনা বাস্তবে পরিণত হয়। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত, সে জাতি তত বেশি উন্নত। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে শিক্ষার হার তুলনামূলক কম। আমাদের দেশে বাল্যকালেই অনেক শিশুকে কর্মে নিযুক্ত করা হয়। যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তেমন একটা দেখা যায় না।
সরকার প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবর্তে তাদের সন্তানদের বিভিন্ন প্রি-ক্যাডেট স্কুল, কিন্ডারগার্টেন বা এসব জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে থাকেন এবং ভর্তির জন্য সেসব প্রতিষ্ঠানে শিশুদের এ বয়সেই ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে হয়। এখন কথা হলো, অভিভাবকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের সন্তানদের ভর্তি করানোর ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহ পোষণ করেন না কেন? অনেকগুলোর মধ্যে প্রধান একটি কারণ হলো বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মান এখনো পর্যন্ত ততটা যুগোপযোগী এবং উন্নত নয়।
অন্যান্য দেশ অপেক্ষা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ দরিদ্র হওয়ার জন্য অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই তাদের শিক্ষা জীবনের প্রথম পাঠদান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্পন্ন করে থাকেন। শিক্ষার শুরুতেই যদি গলদ থাকে তাহলে ভবিষ্যতে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা কতটুকু দক্ষতা, সাফল্য বা বহির্বিশ্বে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্যতা আশা করতে পারি? আবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের জাতীয় বেতন কাঠামোর গ্রেড হচ্ছে ১৩তম। তাদের বেতন স্কেল শুরু হয় ১১ হাজার টাকা দিয়ে।
এ স্বল্প বেতনে একজন শিক্ষক সংসারের যাবতীয় খরচ মেটাতে সম্ভব হয় না। যার ফলে দেখা যায় অনেক সময় তারা বিভিন্ন জায়গায় পার্টটাইম চাকরি করে থাকেন। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে এর প্রভাব পড়ে থাকে।
প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত হলেই একজন শিক্ষার্থী শিক্ষার অপরাপর ধাপগুলোতে সহজেই বিচরণ করতে পারবে এবং নিজেকে দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে দেশে এবং দেশের বাইরে সাফল্য অর্জন করে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনতে পারবে। তাই আসুন, সরকারসহ আমরা সবাই মিলে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষকদের প্রতি নজর দিই।
ফজলে রাব্বি, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ