আমাদের দেশে খেলার ছলে অনেকেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। যা দুঃখজনক এবং এ ধরনের অপরাধমূলক আচরণ রাষ্ট্র কখনোই সচেতন নাগরিকদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ঢাকাগামী কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তরা পাথর নিক্ষেপ করে।

এ সময় পাথরের আঘাতে ইঞ্জিন কামরার জানালার কাচ ভেঙে সহকারী ট্রেনচালকের দুই চোখেই কাচবিদ্ধ হয়। এতে করে তিনি গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ রোধে সামাজিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন কর্মসূচি পালন করা যেতে পারে। প্রত্যেক মসজিদে জুমার বয়ানে ইমাম সাহেবকে উপরোক্ত বিষয়ে জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে রেলওয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা, রেলওয়ের জনবল বাড়ানো ইত্যাদি দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

প্রতিটি ট্রেনে রেলওয়ে পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে রেলওয়ে পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন (১৮৯০) এর ১২৭ ধারায় শাস্তির বিধান রয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের জন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের কথা বলা আছে।

আর কোনো রেলযাত্রী মারা গেলে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় ফাঁসির বিধান এবং পাথর নিক্ষেপকারী অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে সেক্ষেত্রে তার অভিভাবককে শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সমাজের পাশাপাশি পরিবারেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। এর কুফল নিয়ে আলোচনা করতে হবে। পাথর নিক্ষেপে ভুক্তভোগীদের পাশাপাশি রাষ্ট্রেরও বহুবিধ ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে। আসুন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের কল্যাণে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ থেকে অন্যদের বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করি।

ফজলে রাব্বি, মনোহরপুর, কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ