ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আইসিটি উন্নয়নের রোল মডেল

শফিকুল ইসলাম
🕐 ৩:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২১

আইসিটি উন্নয়নের রোল মডেল

বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর হয়েছে যার কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। আজ ২৭ জুলাই তার জন্মদিন। জন্মদিনে আপনাকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আপনার জন্য নিরন্তর শুভ কামনা ও ভালোবাসা। আপনি হলেন আগামী প্রজন্মের একমাত্র বাতিঘর। আপনি আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি এবং তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। নিজস্ব পরিকল্পনা ও কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের জনগণের স্বপ্ন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এক রোল মডেল হিসাবে বিশ্বে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

সজীব ওয়াজেদ জয় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই দেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পরমাণু বিজ্ঞানী ডা. এম এ ওয়াজেদ মিয়া এবং শেখ হাসিনার ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বাঙালিদের যুদ্ধ এবং পরবর্তী বিজয়ের সময় জন্মগ্রহণ করায় তিনি জয় ডাকনাম পেয়েছিলেন। একটি ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া জয় নামটি আমাদের জাতীয় জীবনে আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। স্বপ্নদর্শী এই নেতা আসলে ডিজিটাল বিশ্বে অনেক সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। যা আমাদের জন্য শুভকর এবং দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রেখে যাচ্ছে। মূলত আইসিটি সেক্টরের উন্নয়ন এবং সজীব ওয়াজেদ জয় একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি ছাড়া অন্যটি ভাবার অবকাশ নেই।

তাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু কথা তুলে ধরলাম-

‘ধানমন্ডি ১৮ নম্বরের একটি বদ্ধ বাসায় ১৯৭১ সনে আমি, আমার মা-সহ আমাদের পরিবার বসবাস করেছিলাম। জয়ের যখন জন্ম হয় তখন আমার মাকে আমার সঙ্গে হাসপাতালে যেতে দেওয়া হয়নি। জয়ের নাম আমার পিতা বঙ্গবন্ধুই ঠিক করে রেখেছিলেন। এক পাকিস্তানি কর্নেল আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন জয় নাম রেখেছি কেন? জয় মানে কী? আমি সেদিন বলেছিলাম, জয় মানে জয়। জয় মানে ভিক্টরি!’

আমি মনে করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো, প্রধানমন্ত্রী এবং আপনি (জয়) দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। আপনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আজ আমরা খুব গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, নিজেদের ইচ্ছা, মেধা, পরিকল্পনা এবং অর্থের সাহায্যে বৈদ্যুতিক করণের সূচনা থেকে শুরু করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নামে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি লাভ করছি। যদিও কিছু বিদেশি সংস্থার ভূমিকা রয়েছে, তবে বেশিরভাগ ডিজিটালাইজেশনটি আমাদের দেশীয় সংস্থা সৃষ্টি করেছে। আজ আমরা শহরসহ দেশের যে কোনো গ্রামে-গঞ্জে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পাচ্ছি, যার কারণে বিশ্ব এখন হাতের নাগালে।

আপনি কোনো এক সভায় বলেছিলেন প্রথমদিকে যখন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছিলাম, অনেক বিদেশি সংস্থা তাদের দক্ষতা এবং জ্ঞান থাকার কারণে তারা আমাদের দেশে ডিজিটালাইজেশন করার প্রস্তাব করেছিল। আপনি বলেছিলেন যে আমাদের যোগ্যতা এবং দক্ষতা রয়েছে এবং বলেছিলেন আমাদের সহায়তার প্রয়োজন নেই। আমরা নিজেরাই তা করব। বর্তমানে আমরা সফল হয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ আপনার দিকনির্দেশনায় এবং প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল বিশ্বের আর কোনো দেশ এত অল্প সময়ের মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়নি। বাংলাদেশে এটি সম্ভব হয়েছে একমাত্র আপনি এবং প্রধানমন্ত্রীর কারণে। বাংলাদেশ পুরো বিশ্বের সামনে আইসিটির অগ্রগতির একটি উদাহরণ রেখেছে এবং আজ ডিজিটাল অগ্রগতির কারণে আমাদের অনেক পেশায় বা কাজকর্মে গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন খাতের অনেক ব্যয় কমে যাচ্ছে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ।

বর্তমানে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা অন্যান্য দরিদ্র দেশগুলোকে ডিজিটাল করার জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে দক্ষতা এবং প্রযুক্তি আমদানি করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়াও অনেক দেশও আমাদের নিকট তাদের দেশগুলো ডিজিটালাইজড করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা চায়। যেখানে আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। আইসিটি ফর ডেভলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অর্জন, কারণ পুরো ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথেষ্ট সময় ও শ্রম দিয়ে কাজ করেছেন। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্ভব হতো না এবং আজকের অগ্রগতি ভাবতে পারতাম কিনা তা নিয়েও আমার সন্দেহ রয়েছে। আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আইসিটি সেক্টরের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এবং তরুণ প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ আজ তরুণ প্রজন্ম আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

আইসিটিবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসাবে সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি হিসাবে সুপরিচিত যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটালাইজেশনের দৃষ্টিভঙ্গিকে বাস্তবে রূপান্তরিত করছেন এবং কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগানও রচনা করেছিলেন, যা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়ে ভূমিকা ছিল। ডিজিটাল উন্নয়নের ফলে দেশের নাগরিক মুক্তচিন্তা, তথ্য আদান-প্রদান, মানবাধিকার, অর্থ ব্যবহারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সর্বাধিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছেন বর্তমান সরকার। যার পেছনে যে লোকটি কাজ করে যাচ্ছেন তিনি আমাদের সজীব ওয়াজেদ জয়। আজকে এই কারণে আমরা সরকারি ও বেসরকারি সেবা সহজেই নিতে পারছি। যা গত ৫০ বছরে কল্পনাও করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান সরকারের নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আজ তা সম্ভব হয়েছে এবং এর মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান এবং টেকসই উন্নয়ন।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে, বাংলাদেশ আইসিটি খাত আন্তর্জাতিক বাজার থেকে রপ্তানি আয় নিবন্ধিত করেছে ০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১.৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রায় এক শতাংশ অবদান রয়েছে। আইটি সেক্টরে গত এক দশকে ৩,০০,০০০-এরও বেশি জব সৃষ্টি হয়েছে। দেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিতে আপনার দূরদৃষ্টি ও দূরদর্শী পরিকল্পনা অবশ্যই প্রশংসনীয়। এক দশক আগে প্রকাশিত স্বপ্ন এখন নানাভাবে সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে দেশকে এবং দেশের মানুষকে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফলভাবে চালু করে বাংলাদেশকে একটি অনন্য উচ্চস্থানে নিয়ে গেছেন, যা আমাদের জাতির পিতারও স্বপ্ন ছিল। আজ দেশবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, আমাদের মধ্যে সুপরিচিত এক যোগ্য স্বপ্নদর্শী নেতার পঞ্চাশতম জন্মবার্ষিকী আজ আমরা পালন করছি। আপনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা এবং তার পদক্ষেপে সার্বিক সহযোগিতা করবেন এটাই আমরা বিশ্বাস করছি।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের দক্ষ পরিকল্পনা ও গতিশীল নেতৃত্বে আইসিটি সেক্টর ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শিল্প। বাংলাদেশ আইসিটিকে ‘সম্ভাবনাময় সেক্টর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কারণ এটি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্প বিকাশসহ অন্যান্য খাতে উন্নতির সম্ভাবনায় অবদান রেখেছে। তাই বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার রূপকার এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সৃষ্টির রোল মডেল, প্রধানমন্ত্রী হলেন অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল ও মাদার অব হিউম্যানিটি এবং সজীব ওয়াজেদ জয় হলো আইসিটি উন্নয়নের রোল মডেল।

শফিকুল ইসলাম : শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি-শিক্ষক সমিতি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ এবং পিএইচডি ফেলো, জংনান ইউনিভার্সিটি অব ইকোনমিকস অ্যান্ড ল, উহান, চীন

 
Electronic Paper