ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

করোনা রোধে প্রযুক্তির আশ্রয়

শেখ আনোয়ার
🕐 ১:১১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২১

করোনা রোধে প্রযুক্তির আশ্রয়

প্রযুক্তির এ যুগে মানবসম্প্রদায় যখন ভিনগ্রহে বসতি স্থাপনের চিন্তায় ব্যস্ত, ঠিক তখন অতি নগণ্য, করোনাভাইরাস নামে এক মহামারী থমকে দিয়েছে প্রযুক্তির চূড়ান্ত উৎকর্ষ-ধন্য সভ্যতাকে। কেউ হয়তো ভাবতেও পারেনি পৃথিবী এভাবে থমকে যেতে পারে। করোনাভাইরাসের ভয়ে লকডাউনে বিশ্বের প্রায় অর্ধেকের বেশি লোক ঘরে সময় কাটাচ্ছেন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এত মানুষ এত দীর্ঘকাল ঘরবন্দি থাকার নজির নেই।

করোনায় ছবি বদল : বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে ক’দিন আগেকার দৃশ্যপট খেয়াল করুন। ভ্যাপসা গরমে, খররোদে যখন একটার পর একটা গাড়ি হু হু করে ধুলা উড়িয়েছিল, তখনই-বা ঠিক কতজন মাস্ক ব্যবহার করেছিলেন? রাস্তায় আগে ধুলা উড়ার ধোঁয়াটে দৃশ্য- বাস, গাড়ি বা বাইকে চেপে যাওয়ার সময় হাজার হাজার মানুষ দেখেছেন। বড়জোর সে সময়টুকু নাকে-মুখে রুমাল চাপা দেওয়া হতো। সতর্কতা বলতে এতটুকুই ছিল তখন। সামাজিক দূরত্ব কী জিনিস, তখন ছিল অজানা। এই তো ক’দিন আগের কথা। চলমান কঠোর লকডাউনের আগের কথা ভাবুন। মাস্ক ছাড়া, সামাজিক দূরত্ব না মেনে ঢিলেঢালা চলাফেরা করায় ডেল্টা করোনার দাপাদাপিতে এখন অস্থির গোটা দেশ। এখন যারা মাস্ক ব্যবহার করছেন, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করছেন, বারবার সাবান দিয়ে বা স্টেরিলাইজার দিয়ে হাত ধুচ্ছেন, তাদের ক’জন এবারের কঠোর লকডাউনের আগে দোকানে ফাস্টফুড পিজা বা রাস্তার টং দোকানের ফুচকা খাওয়ার আগে সতর্কভাবে হাত ধুয়েছেন? আমরা এই মানুষগুলোই যেন স্বঘোষিত নাগরিক অধিকার ভেবে পথ-ঘাটে মাস্ক ছাড়া চলাচল করেছি। যত্রতত্র থুথু আর পানের পিক ফেলে বিমূর্ত চিত্র অঙ্কন করেছি। এই প্রেক্ষিত থেকে মানুষের আজকের যে সতর্ক অবস্থান, তা ছবি বদল নয় তো কি?

বেঁচে থাকা শিখতে হবে : এবারের কঠোর লকডাউনকালে সকলের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে একটা প্রশ্ন। আমরা যেভাবে চলছিলাম সেভাবে আর চলা যাবে কি? লকডাউনের পর সবকিছু কি আগের মতো থাকবে? এই ভয়াবহ সময় কাটিয়ে কি ফিরব আগের ছন্দে? নাকি পুরোদস্তুর বদলে যাব? করোনা ভবিষ্যৎ পৃথিবীকেই পাল্টে দেবে না তো? কেমন হবে প্রযুক্তিনির্ভর বিশ^? বিজ্ঞানী গবেষকদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তার রেখা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘করোনার টিকা বা কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন না হওয়া পর্যন্ত এই পরিবর্তনকে মেনে নিতে হবে।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই আমাদের বেঁচে থাকা শিখতে হবে।’ একবাক্যে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন, ‘করোনা পরবর্তী সময় কখনো আর আগের মতো হবে না। আমাদের সামাজিকতা, পারিপার্শ্বিকতা, আচরণ, ব্যবহার, সম্পর্কের ধরন বদলে যাবে। বিভিন্ন ক্ষেত্র বদলে যাবে।’

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘মানুষের মনে যে ভয় সেঁটে গেছে, তা কাটাতে দশ থেকে বিশ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। মানুষে-মানুষে সংস্পর্শ কমে যাবে।’ বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলেই তাকে বুকে জড়িয়ে ধরা, অফিসে ঢুকেই সহকর্মীর হাত ধরে ঝাঁকুনি দেওয়া, পাড়ার ছোট ভাইটার কাঁধে হাত চাপড়ে সাহস দেওয়া, কিংবা পরীক্ষায় ভালো করায় কাজিনের মাথায় হাত রেখে দোয়া করার মতো বিষয়গুলো হয়তো ফিরবে না।

ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল : করোনাকালে বাংলাদেশে শারীরিক উপস্থিতির বদলে ভার্চুয়াল উপস্থিতি বা ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনে আরও বেশি প্রয়োজন বলে অনুভূত হচ্ছে। সরকারের প্রেরণায় করোনায় ব্যবসায় ডিজিটাল রূপান্তর বেড়ে গেছে। সব সংস্থা এখন ডিজিটালভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বিপণন, কোডিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্টসহ ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন পেশাদারদের প্রয়োজন ও গুরুত্ব এখনকার চেয়ে আরও বেশি হবে।

একযুগ আগে শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে ডিজিটাল রূপান্তর করায় করোনা দুর্যোগে নানান ঝক্কি মোকাবিলার কাজ অনেকটাই সহজ হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম লকডাউনে ঘরে বসে অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির গোড়ায় চাপিয়ে দেওয়ার কারণে তরুণ প্রজন্ম হা হা করে ছুটছে প্রযুক্তির সঙ্গে। ঘরে ঘরে ডিজিটাল আউটসোর্সিং পেশায় এই প্রজন্ম নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাযুদ্ধে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছেন। সার্বক্ষণিক পাশে থেকে করোনাযুদ্ধের পরিস্থিতি নিজেই মনিটরিং করছেন। দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ভার্চুয়াল পাশে পেয়ে বুকে সাহস আসছে। চাঙ্গা হচ্ছে মনোবল।

ঘরে থেকে ভোট হবে স্মার্টফোনে : একথা ঠিক, বাংলাদেশে আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বেশ কিছু চাকরি নিয়ে নেবে। আগামীর বাংলাদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত নতুন নতুন ডিজিটাল অ্যাপস সমাধান করবে মানুষের প্রাত্যহিক যাবতীয় দরকারি কাজ। সময় বাঁচানোর জন্য মানুষ সামনা-সামনি দেখা-সাক্ষাৎ এড়িয়ে যাওয়ার বিকল্প অনলাইন, ফোন কল, জুম, স্কাইপে কিংবা চ্যাট বেশি বেছে নেবে। নতুন দিনের সূচনা হবে- চলো অনলাইনে দেখা করি। করোনায় অফিসের সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ চালিয়ে নেওয়া হলেও অনলাইনে হোম অফিস সত্যিই যে কাজের গতি বাড়িয়ে দেয় সেটা যেহেতু মানুষ বুঝে গেছে তাই এর প্রচলন বাড়বে। অফিসের কাজে প্রয়োজন হবে আরও বেশি অনলাইন দক্ষতার। করোনার পরে হয়তো অফিসে অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেওয়ার প্রবণতা কমে আসবে। ঘরে বসে কাজ করাকে উৎসাহিত করা গেলে জ্যাম, যাতায়াত খাতে সময় ও অর্থ ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। কর্মক্ষেত্রের পরিবর্তন আসবে। ধীরে ধীরে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্টাফকে রোস্টারে কাজ করিয়ে ছোট অফিস ভাড়া নিয়ে আর্থিক সাশ্রয়ের প্রচলন শুরু হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডাটা, ইন্টারনেট অব থিংস, ভার্চুয়াল ও অগমেন্টেড রিয়্যালিটি এবং রোবোটিকসের ব্যবসাগুলো করোনার পরবর্তী অর্থনীতির ভবিষ্যৎ। দেশে দেশে ইতোমধ্যে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন কাজে রোবটের ব্যবহার বেড়ে গেছে। মানবশ্রমিকের প্রয়োজন ফুরিয়ে যেতে বসেছে। রোবটের কাছে হেরে যাচ্ছে মানুষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে শ্রমবাজারের ৫২ ভাগই চলে যাবে রোবট যন্ত্রের দখলে।’ গবেষকরা বলছেন, ‘আগামী দিনে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে। শারীরিক নৈকট্যের মাধ্যমে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়া রোধে ভোটারকে আর ভোটকেন্দ্রে সশরীরে হাজির হয়ে ভোট দিতে হবে না। ভোটের প্রচার, এমনকি ভোটের কাজ সম্পাদন করবে অনলাইন অ্যাপস। ভোট হবে ঘরে থেকে স্মার্টফোনে। এতে হানাহানি কমবে নিশ্চিত। সাশ্রয় হবে বাহুল্য খরচ।

করোনা রোধে ডিজিটাল প্রযুক্তি : চীন কি শুধু লকডাউন করে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সফল হয়েছে? জি না। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনা নির্মূল করে দ্রুত চমক সৃষ্টি করে চীন। নাগরিকের আঙ্গুলের তাপমাত্রা কত? ত্বকের নিচে রক্তের চাপ কত? অ্যাপের মাধ্যমে সব মানুষের স্মার্টফোন খুব নিবিড়ভাবে মনিটর করে। ফেস-রিকগনাইজিং বা চেহারা চিনতে পারে এরকম লাখ লাখ ক্যামেরা দিয়ে নজর রাখা হয় মানুষের ওপর। দ্রুত ভাইরাস বাহক শনাক্তকরণই নয়, সেই বাহকের চলাফেরা ট্র্যাক থেকে শুরু করে কাদের সংস্পর্শে ভাইরাস বাহক ছিল তাও বের করে ফেলা হয় অসম্ভব দ্রুতগতিতে। ফলে সরকার খুব দ্রুত শনাক্ত করতে পারে, কে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত, কার সাহায্য প্রয়োজন, কে আক্রান্ত নয়। চীনের দেখাদেখি ইতোমধ্যে বেশ কিছু দেশের সরকার নতুন ন্যানো সারভেইল্যান্স টুলস ব্যবহার করছে। গবেষকদের মতে, বর্তমান করোনা মহামারীর সময় এসব স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো করোনার পরে পাকাপাকি ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগামী দিনে জনকল্যাণে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে দেশে দেশে সরকারগুলোর জানা থাকা দরকার হবে আপনার শারীরিক অবস্থার সম্পূর্ণ তথ্য। সংক্রামক রোগ থেকে জনগণকে বাঁচাতে নিজ নিজ শরীরের তাপমাত্রা মাপা, পরীক্ষা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য সরকারকে বাধ্যতামূলক জানাতে হবে।

জীবাণুর খোঁজে সরকার : বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৫০ বছর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নে ২৪ কোটি মানুষের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারির কোনো সুযোগ কেজিবির ছিল না। কেজিবি-কে নির্ভর করতে হতো এজেন্টদের ওপর। আগে নাগরিকের ওপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারির কথা ভাবতেও পারত না কেউ। কিন্তু এখন এমন প্রযুক্তি এসে গেছে যা দিয়ে রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি মুহূর্তের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা খুব সহজ। জীবাণু থেকে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে সরকারগুলোর বাধ্যতামূলক নির্দেশে প্রতিটি নাগরিককে শরীরের সঙ্গে বায়োমেট্রিক মাইক্রোচিপ বেল্ট, ব্যান্ড বা ঘড়ি হিসেবে পরার ব্যবস্থা সব নাগরিকের ওপর বাধ্যতামূলক প্রয়োগ করলে বিস্মিত হওয়ার কিছু থাকবে না।

সরকারগুলোর বড় বড় করপোরেশন এভাবে বায়োমেট্রিক ডাটা গণহারে সংগ্রহ করবে। পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারিতে কাজে লাগাবে। এভাবে আমরা নিজেদের যতটা জানি বা চিনি, তার চেয়ে রাষ্ট্র ভালোভাবে জানবে আমাদের। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা আমাদের হার্টবিট আর শরীরের তাপমাত্রা মনিটর করবে। দেশের সবখানে ছড়িয়ে থাকা ব্লুটুথ, ওয়াইফাই সেন্সর আর শক্তিশালী অ্যালগরিদমের মাধ্যমে কাজটা হবে খুব সহজে। সংগৃহীত ডাটা চলে যাবে সরকারের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যভা-ারে। বিশ্লেষণ হবে বিশেষ অ্যালগরিদম দিয়ে। ব্যক্তি মানুষ নিজে জানার আগে সরকার জেনে যাবে কে সুস্থ আর কে অসুস্থ। ফলে সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটা দমন করা খুব সহজ হবে।

করোনা রোধে বায়োমেট্রিক মাইক্রোচিপ : সম্প্রতি করোনা রোধে বায়োমেট্রিক মাইক্রোচিপ তৈরি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগনের তত্ত্বাবধানে জীবাণু অস্ত্র নিয়ে কাজ করা মার্কিন সরকারের প্রতিষ্ঠান ‘ডিফেন্স অ্যাডভান্স রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি’র (ডারপা) গবেষক, মার্কিন সেনাবাহিনীর সংক্রমণ রোগের বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ডা. ম্যাট হেপবার্ন। এই মাইক্রোচিপ শরীরে প্রবেশ করালে করোনাভাইরাস শনাক্ত ও প্রতিরোধ করে। তিনি বলেন, ‘এই মাইক্রোচিপ জেলির মতো নরম। এটি চামড়ার টিস্যুতে লাগিয়ে টেস্ট করা হয়েছে। করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি এটির সংস্পর্শে এলে সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রটি সংকেতের মাধ্যমে জানান দেয় শরীরে জীবাণুর কোনো রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা। এটি গাড়ির ইঞ্জিন চেকের সংকেতের মতো। সংকেত দেওয়া মানে আপনি করোনা সংক্রমিত হতে যাচ্ছেন। এই বায়োচিপে ব্যবহৃত ন্যানো মেশিন শরীরে বসে রক্ত পরিবহনের সময় রক্তে থাকা করোনার জীবাণু, যন্ত্রের ন্যানো ফিল্টারে তিন থেকে পাঁচ মিনিটে বিষক্রিয়া ধ্বংস করে। তারপর রক্ত পরিশুদ্ধ করে শরীরে ফেরত পাঠায়।’ তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘এছাড়া মাইক্রোচিপে আর কোনো গোপনীয়তা নেই। শুধু করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এটি তৈরি করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, এটি এমন এক সময়ে তৈরি করা হয়েছে যখন গুজব ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব চলছে যে, মানুষের শরীরের মধ্যে মাইক্রোচিপ ঢোকানোর জন্য ভ্যাকসিন বানিয়েছেন বিল গেটস।

শেষ কথা : সমালোচকরা বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে নাগরিকের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তির এমন ব্যবহার সমাজতান্ত্রিক দেশে কোনোরূপ প্রশ্নবিদ্ধ না হলেও গণতান্ত্রিক দেশসমূহে নাগরিকের গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। প্রতিটি নাগরিকের প্রতি মুহূর্তের চলাফেরা শুধু নয়, মত প্রকাশে কারও আবেগ-অনুভূতি, পছন্দ-অপছন্দ, রাগ-ক্ষোভ, রক্ত গরমের খবরও সরকারের জানা সহজ হবে। তাই বলা যায়, ‘যে প্রযুক্তি আমাদের কাশি শনাক্ত করতে পারে, সেটি দিয়ে আমাদের হাসিও শনাক্ত করা সম্ভব।’ তবে সমাজ, সভ্যতা সচল রাখতে নতুনভাবে বাঁচতে এর বিকল্প না থাকায় বেলা শেষে এই প্রযুক্তি করোনা জীবাণুযুদ্ধে বেশি উপকারী, সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী হিসেবে প্রমাণিত হবে। সংক্রমণ চিহ্নিত করে, শরীর স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মত বাস্তবতা হিসেবে এসব বায়োমেট্রিক মাইক্রোচিপ আগামী দিনে সকলেই সাদরে লুফে নেবে!

শেখ আনোয়ার : বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক

 
Electronic Paper