ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চা-শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি

সাবিনা আক্তার
🕐 ৩:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২১

চা-শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি


সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত পরিবারে দেখা যায়, এক কাপ চা না হলে যেন তাদের সকাল কাটতেই চায় না। শুরু হয় না কর্মব্যস্ত জীবন। চাপ কিংবা স্বস্তি, মেঘ কিংবা রোদ পোহানো ক্লান্ত দিনে এক কাপ চা হয়ে ওঠে স্বস্তির কারণ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এই চা উৎপাদনে যাদের অবদান, তাদের জীবন রয়েছে দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত, বোবা কান্নার গান। সমাজের সর্বস্তরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও উন্নত হচ্ছে না চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান।

বাংলাদেশ চা উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, দেশে চা বাগানের সংখ্যা রয়েছে ১৬৭টি। আর এসব বাগানে কাজ করে এমন শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার। পুষ্টিহীনতা, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। সারাদিন খেয়ে না খেয়ে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে একজন চা শ্রমিক মজুরি পান ১০২ টাকা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এই টাকা দিয়ে পরিবারের সকল সদস্যের খাবার জোগাড় করাই সম্ভব হয়ে ওঠে না, আর পুষ্টিকর খাবারের কথা তো চিন্তাই করা যায় না।

সবুজময় শতবর্ষী চা বাগানগুলোতে মৌসুমে চায়ের নতুন পাতার সূচনা হয় কিন্তু সংকটমুক্ত হয় না চা শ্রমিকদের জীবন। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে চা শ্রমিকরা চা পাতা সংগ্রহ করে দেশের চা শিল্পে বিরাট অবদান রাখে। অনেক সময় চা বাগানের ভিতরে নানা রকম পোকামাকড়, জোঁক, সাপের কামড়ে আহত হয়ে ভোগে বছরের পর বছর। ঠিকমতো মেলে না চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারও। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু আজও চা শ্রমিকরা শিক্ষার অধিকার থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত। অধিকার থেকে বঞ্চিত করা এক অর্থে সমাজবিচ্যুত করারই মতো।

অনেক কিছু পাল্টালেও চা শ্রমিকদের দাসত্বের জীবন পাল্টায়নি। এখনো তারা মূলধারার সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বনিম্ন মজুরি বোর্ড চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১১৭ টাকা থেকে ১২০ টাকা সুপারিশ করে খসড়া গেজেট প্রকাশ করেছে। এই সুপারিশ প্রত্যাখান করেছে চা শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন। চা শ্রমিকদের দাবি তাদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করা হোক।

দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হোক। এই দুঃখী চা শ্রমিকদের দুঃখ লাঘব হয়ে মুখে হাসি ফুটুক।

সাবিনা আক্তার, শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

 
Electronic Paper