রোগীবান্ধব চিকিৎসক হওয়া জরুরি
আবু মো. ফজলে রোহান
🕐 ১:০৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২১
বর্তমান সময়ে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসা সেবার মান বাড়ছে কিনা- এমন প্রশ্ন রয়েছে জনমনে। ভুরি ভুরি ডাক্তারের ভিড়ে কজনইবা কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছেন? কজনই রোগীকে ঠিকঠাক সময় দিচ্ছেন? মূলত ডাক্তারদের কমিশন বণিজ্য, কোটিপতি হওয়ার আকাক্সক্ষা কিংবা অহংকারের কারণে রোগীরা প্রত্যাশিত সেবাপ্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হয়ে থাকেন।
অথচ একজন ডাক্তারের কোমল, হৃদয়স্পর্শী কথা রোগীর ৮০% রোগ সারিয়ে দিতে সক্ষম। রোগী নিজেকে হালকা মনে করার অন্যতম উপাদান ডাক্তারের আশ্বাস কিংবা হৃদয়গ্রাহী কথামালা। দুঃখজনক হলেও সত্য ইদানীংকালে বেশিরভাগ ডাক্তার সেদিকে দৃষ্টি রাখেন না। অল্প সময়ে অনেক রোগী দেখে পকেট ভারী করার এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ডাক্তাররা রোগীকে যা সময় দেন, তা এক মিনিটেরও কম। বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে এ ধরনের চিত্র খুবই স্বাভাবিক এবং নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে।
যার ফলে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা স্বীয় কর্মক্ষেত্রের চেয়ে প্রাইভেট চেম্বারকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এতে করে সরকারি সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং রীতিমতো দুর্নাম ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে বড় বড় ডাক্তারদের একটি অংশ ভাবগাম্ভীর্য, নিজের পদের অহংকারে রোগীর সঙ্গে খোলা মনে কথাও বলতে চান না। যার ফলে দেখা যায়, রোগী তার সমস্যা বিস্তারিতভাবে বলতে অস্বস্তি অনুভব করেন। এতে করে সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বহু রোগী। তবে এটা সত্য, গুটি কয়েক সৎ মানসিকতার ডাক্তার আছেন যারা পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে টাকার চেয়ে সেবাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ফলে রোগী তার সমস্যার কথা মন খুলে অনায়াসে বলতে পারেন এবং ডাক্তারও মনোযোগসহ শুনে তারপর ট্রিটমেন্ট দেন।
চিকিৎসা সেবায় অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, করোনাকালে অনেক দুর্নীতির চিত্রও সামনে এসেছে। নকল মেডিসিন, চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটসহ বহুবিধ সমস্যা থাকার পরেও ডাক্তারদের সুন্দর কথা বা রোগীকে একটু বেশি সময় দেওয়াÑ এসব ছোটখাটো কাজগুলো হতাশার গ-ি থেকে বেরিয়ে আমাদের খানিকটা স্বস্তি জোগায়, ডাক্তারদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দেয়।
আবু মো. ফজলে রোহান, শিক্ষার্থী, দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা, ঢাকা